১২ মে, ২০২৪ ১১:২৪

পাহাড়ে রসে ভরা লিচুর বাম্পার ফলন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে রসে ভরা লিচুর বাম্পার ফলন

দেখতে সিঁদুর লাল। ভিতরে সাদা। রসে ভরা টসটসে আর মিষ্টি। দেখতে যেমন আকর্ষনী, খেতেও দারুন মজাদার। এমন লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে পার্বত্যাঞ্চলে। তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়ে লিচু বাগানজুড়ে এখন দেখা মিলছে থোকায় থোকায় কাঁচা পাকা লিচু। এরই মধ্যে তা বাজারেও এসেছে। ক্রেতাদেরও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। তাই দাম বেশ চড়া। চাষীরা বলছেন, স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে এ লিচু রফতানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। 

পার্বত্যাঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে এবার লিচুর আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ১৫২ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৯ মেট্টিক টন। তার মধ্যে রাঙামাটিতে লিচু আবাদের জমির পরিমাণ এক হাজার ৮৯০ হেক্টর। উৎপাদন ১৭ হাজার ১০ মেট্টিক টন। খাগড়াছড়িতে লিচুর জমির আবাদের পরিমাণ এক হাজার ৯৯৩ হেক্টর। উৎপাদন ১১ হাজার ৫৯১ মেট্টিক টন। আর বান্দরবানের জমির পরিমান এক হাজার ২৬৯ হেক্টর।  আর উৎপাদন ৮ হাজার ২৬৮ মেট্টিক টন। 

স্থানীয় লিচু চাষী সুমনা চাকমা বলেন, রাঙামাটিতে এবার দেশিও লিচুর আবাদ ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছি। ব্যাপারিরা চট্টগ্রাম থেকে এসে নিয়ে গেছে। 

রাঙামাটির বনরূপা বাজারের লিচু ক্রেতা মো. আলী হোসেন বলেন, পাহাড়ে উৎপাদিত এ লিচু আসলে খুবই মিষ্টি। এ ছাড়া পোকাও নেই। দাম একটু বেশি হলেও লিচু ক্রয় করছি বাচ্চাদের জন্য। 

অন্যদিকে, শুধু রাঙামাটির হাটবাজর নয়, এ লিচুর বাজার দখল করেছে অপর দু’পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে এ লিচু যাচ্ছে ঢাকা- চট্টগ্রামসহ আশপাশের জেলায়। পাহাড়ে দেশিও লিচুর পাশপাশি চায়না-২ ও চায়না-৩ ও বম্বে জাতের লিচুর চাষ বেড়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি সদরের বালুখালী, জীবতলী, মগবান, বন্দুকভাঙ্গা, সাপছড়ি, কুতুকছড়ি, কাপ্তাইয়ের নাভাঙ্গা, ওয়াগ্গা, বড়াদম, রাইখালীসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় লিচুর ব্যাপকহারে চাষ হয়েছে। লিচুর বাম্পার ফলনও পাওয়া যাচ্ছে সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে। রাঙামাটি শহর এলাকাসহ স্থানীয় বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন গড়ে প্রায় বিশ লাখ টাকার লিচু বেচাকেনা হচ্ছে এখন। স্থানীয় বাজারে পাইকারি দরে প্রতিশ’ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০ টাকায়। আর প্রচুর লিচু সরবরাহ হচ্ছে জেলার বাইরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাঙামাটি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক  উপ- পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, অবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে লিচুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। আশানরূপ লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন হয়েছে। আশা করি এবার লিচু চাষীরা লাভবান হবে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর