শিরোনাম
২১ জুন, ২০২৪ ১৮:৪১

গোপালগঞ্জে রেকর্ড ফলন দিয়েছে বিনা চিনাবাদাম-৬

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি


গোপালগঞ্জে রেকর্ড ফলন দিয়েছে বিনা চিনাবাদাম-৬

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বিনা চিনাবাদাম-৬ একটি উচ্চ ফলনশীল চিনাবাদামের জাত। এ জাতের চিনাবাদাম হেক্টরে সর্বোচ্চ ২ টন ৯শ কেজি ফলন দিতে সক্ষম। কিন্তু গোপালগঞ্জে এ বিনা চিনাবাদাম ২ টন ৯শ ৫৮ কেজি ফলন দিয়েছে। এটি বিনাচিনাবাদাম-৬ জাতের রেকর্ড পরিমাণ ফলন। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের কৃষক সাইফুল আলম খান বিনা চিনাবাদাম চাষ করে ২ টন ৯শ ৫৮ কেজি ফলন পেয়েছেন।

কৃষক সাইফুল আলম খান বলেন, আমি গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে আমার ১শ ৫০ শতাংশ জমিতে বাদামের আবাদ করি। প্রতি শতাংশে আমি এ জাতের বাদাম ১২ কেজি ফলন পেয়েছি। সে হিসাবে ২৪৬.৫১ শতাংশের ১ হেক্টরে এ বাদাম ফলন দিয়েছে ২ টন ৯শ ৫৮.১২ কেজি । এটি রেকর্ড ফলন বলে মন্তব্য করেন ওই কৃষক।  

সাইফুল আলম খান আরো বলেন, আমার দেড় একর জমিতে বাদাম আবাদে খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। এখান থেকে আমি ১ হাজার ৮শ কেজি বাদাম পেয়েছি। প্রতি কেজি বাদাম ১শ টাকা দরে বিক্রি করতে পারব। উৎপাদিত বাদাম ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। খরচ বাদে লাভ হবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ধান ও পাটের তুলনায় বাদামে লাভ অনেক বেশি। বাদামের পর আমি বিনা আমন ধান করব। আমন কেটে স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন বিনা সারিষা চাষ করে আসছি। বিনার শস্য বিন্যাস অনুসরণ করে আমি প্রতি বছর একই জমিতে ৩টি ফসল করতে পারছি। এতে আমার আয় বেড়েছে।আর্থসমাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছি।

একই গ্রামের বাদাম চাষী প্রহল্যাদ বিশ্বাস বলেন, আমাদের গ্রামে অধিকাংশ কৃষক বাদাম চাষ করেন। আমরা লাভজনক  বিনা চিনাবাদ-৬ আবাদ করতে চাই।কিন্তু বিনা আমাদের বীজ দিতে পারে না। তাই এ জাতের বাদামের আবাদ আমরা সম্প্রসারণ করতে পারছি না। তিনি বীজ প্রাপ্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। 
গোপালগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার দেবনাথ বলেন, বিনাচিনাবাদাম-৬ এর বীজ বিএডিসি উৎপাদন করে।বাদাম আবাদের আগে কৃষক আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে মান সম্পন্ন বিনাচিনাবাদাম-৬ এর বীজ সরবরাহ করতে পারব। আর এতে বিনা চিনাবাদাম-৬ জাতের চাষাবাদ সম্প্রসারিত হবে। ভাল ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন। দেশে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্রের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইনচার্জ ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বিনা চিনাবাদাম-৬ হেক্টরে ২টন ৯শ কেজি পর্যন্ত ফলন দিতে পারে। কিন্তু কৃষক সাইফুল এ বাদাম চাষ করে বাড়তি পরিচর্যা করেছেন। তাই তিনি রেকর্ড পরিমাণ ২ টন ৯৫৮ কেজি ফলন পেয়েছেন। এ চিনাবাদামের জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৫০ দিন। বাদামের ভেতরের দানা পুষ্ট। তাই তেলের পরিমান ৪৮%। এ বাদাম আবাদ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এ বাদামের বদৌলতে কৃষক একই জমিতে বছরে ৩টি ফসল করতে পারেন। এ বাদামের চাষ সম্প্রসারণ করতে পারলে দেশে ভোজ্য তেলের আমাদানী হ্রাস ও তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব বলে ওই কৃষি বিজ্ঞানী মন্তব্য করেন। 
উল্লেখ্য এ বছর জেলায় বিনাচিনাবাদাম-৬ এর ২০টি প্রদর্শনী প্লট করে  গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্র। প্রত্যেকটি প্লটেই কৃষক প্রত্যাশার বেশি এ জাতের বাদামের ফলন পেয়েছেন।

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর