২৪ জুলাই, ২০২৪ ১৮:১২
ঐতিহাসিক রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানা

মায়াবী চিত্রা হরিণের দল দর্শনার্থীদের কাছে টানছে

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

মায়াবী চিত্রা হরিণের দল দর্শনার্থীদের কাছে টানছে

মধ্যযুগের বিখ্যাত সামন্ত রাজার অমর কীর্তি দিনাজপুরের রামসাগর, যা সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহাসিক দীঘি। প্রাকৃতিক অপরূপ নয়নাভিরাম দীঘিটি পর্যটকদের ভালো লাগার পরশে মনকে ছুয়ে যায়। এর সাথে বেশি পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ছে রামসাগরের মিনি চিড়িয়াখানার মায়াবী চিত্রা হরিণগুলো।

কিন্তু কোটা আন্দোলনের সময় এবং কারফিউ চলাকালীন ঐতিহাসিক রামসাগরের এই মিনি চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী শূন্যে নেমে আসে। তবে বুধবার দিনাজপুরে কারফিউ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিথিল হওয়ায় আবারও দর্শক-পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ফিরেছে সকল বয়সের নারী পুরুষের সমাগম।

এ বছরে এখন পর্যন্ত দিনাজপুরের মায়াবী চিত্রা হরিণের সংসারে এসেছে আরও ৯টি নতুন অতিথি। এ নিয়ে এখানে সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৩টি। নতুন অতিথি শাবকদের নিয়ে মিষ্টি রোদের আলোয় বসে থাকে মা হরিণগুলো। এ দৃশ্য দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়ছে। বাদাম বা খাওয়ার কিছু নিয়ে ডাকলে অনেক চিত্রা হরিণ ব্যারিকেডের কাছে ছুটে আসছে। এসময় নতুন অতিথি শাবকগুলো মাকে খুঁজে ফিরে। তবে কেউ শব্দ করলে তারা আবার পালিয়েও যাচ্ছে।

উপমহাদেশীয় হরিণ প্রজাতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন চিত্রা হরিণ। চিত্রা বা চিত্রল থেকে এ হরিণের নামটি এসেছে। যার অর্থ ফোঁটা বা ছোপযুক্ত। চিত্রা হরিণের দেহ লালচে বাদামি লোমযুক্ত চামড়া দ্বারা আবৃত, যাতে সাদা সাদা ফোঁটা দেখা যায়। গলার নিচে, পেট, লেজের নিচে ও চার পায়ের ভেতরের চামড়ার বর্ণ সাদা। হাঁটু থেকে পা অবধি হালকা সাদা বা ধূসর রং রয়েছে। এদের রেখা পিঠ দিয়ে লেজ পর্যন্ত চলে গেছে।

মোসাদ্দেক হোসেন, আসাদুজ্জামান লিটনসহ কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, ঐতিহাসিক এই রামসাগরের জলরাশি জেলা প্রশাসন এবং বাকি অংশ বনবিভাগ দেখভাল করে। এতে সেবার মান আজও বাড়েনি। অথচ বনবিভাগকে জলরাশিসহ পুরোটাই দিলে এখানে ঝুলন্ত সেতু, বিভিন্ন রাইডসহ পর্যটকদের আকর্ষণীয় করতে আধুনিকায়নে পদক্ষেপ নিতে পারে। আর এসব আধুনিকায়ন করা গেলে এটিই হতে পারে উত্তরাঞ্চলের পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান। পাশাপাশি সরকারের রাজস্বও বাড়বে।

চিত্রা হরিণের প্রিয় খাবার শাপলা পাতা। রামসাগর দীঘিতে শাপলা চাষ করতে পারলে হরিণের খাদ্য চাহিদা কিছুটা মেটানো সম্ভব হবে। কিন্তু দীঘিতে মাছ শিকার, ইঞ্জিন নৌকা চালানোর কারণে শাপলা চাষ বন্ধ হয়ে যায়। তবে রামসাগর দীঘিতে শাপলা চাষ করা গেলেই খাবারের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব বলে জানান হরিণগুলোর তদারককারী বাবুল।

দিনাজপুর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক ও বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে ছয়টি চিত্রা হরিণ আনা হয়। বংশ বিস্তারের পর এখন এদের সংখ্যা ৯৩টি। দিন দিন এখানে হরিণের সংখ্যা বেড়েছে। মিনি চিড়িয়াখানায় দৃষ্টিনন্দন চিত্রা হরিণ ছাড়াও অজগর সাপ, পাখি, বানরসহ কিছু প্রাণী রয়েছে, যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর