৩০ আগস্ট, ২০২৪ ০৪:৫৪

কৌতূহল কেলি কদমে

দিনাজপুর প্রতিনিধি

কৌতূহল কেলি কদমে

বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় কেলি কদম উদ্ভিদে বর্ষা শেষে ফুল ফুটলেও ফল ধরে না এবং এই প্রজাতির গাছ থেকে এখনো সাধারণ নিয়মে কোনো চারাও হয়নি। কেলি কদম গাছটি নিয়ে অনেকে গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ করছেন। কৌতূহলের কেন্দ্রে রয়েছে এ গাছটি। উত্তরবঙ্গের এই উদ্ভিদের অস্তিত্ব আর কোথাও পাওয়া যায়নি এবং এখনো এ গাছের চারা করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেন দিনাজপুর সরকারি কলেজের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ও লেখক মো. দেলোয়ার হোসেন। দিনাজপুর সরকারি কলেজের উত্তর-পশ্চিম কোনে জীববিজ্ঞান ভবনের পেছনে এ উদ্ভিদ গাছটি রয়েছে। ৪০-৫০ ফুট উঁচু শাখা-প্রশাখা যুক্ত উদ্ভিদটির সঠিক বয়স জানা না গেলেও এর বয়স শত বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবার গাছটিকে নিয়ে রয়েছে নানান পৌরানিক কথা।

জনশ্রুতি রয়েছে, কৃষ্ণ রাঁধাকে এই কেলি কদম ফুল দিয়ে প্রেম নিবেদন করেন। এ ফুলের মাধ্যমেই রাঁধা কৃষ্ণের প্রেমে পড়েন বলে কথিত আছে। গাছটিকে দেখতে অনেকে ক্যাম্পাসে আসেন। গাছটি নিয়ে গবেষণার যেন শেষ নেই।

বিরল প্রজাতির এ কেলি কদম উদ্ভিদে বর্ষাকাল শেষে বা শরৎকালের শুরুতে ফুল ফোটে। কিন্তু এবার বর্ষা শেষে ফুল ফোটা শুরু করে। ফুলটি কদমের মতো কিন্তু অতিক্ষুদ্র এবং মাধুর্যময়। এখনো কেউ এ গাছের ফল ধরতে দেখেননি। দিনাজপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তথ্য মতে, কাস্টল উদ্ভিদটির পাতা কর্ডেট এবং বড় বড় আকৃতির, ফুল কদম ফুলের মতো। তুলণামূলক খুবই ক্ষুদ্রাকৃতির। Rubiaceae গোত্রের উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম-Adina cordifolia. শিক্ষকদের সহাযোগিতায় উদ্ভিদটির বংশবিস্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে বর্তমানে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহযোগী অধ্যাপক ও লেখক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, দুর্লভ প্রজাতির এ উদ্ভিদটি এখানে ছাড়া অত্র অঞ্চলে আর কোথাও থাকার কোনো রেকর্ড এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ক্যাম্পাসে থাকা গাছটিকে বিগত ২৩ বছর পর্যবেক্ষণ করেও গাছটি থেকে চারা উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করে চারা উৎপাদনে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান, দুর্লভ প্রজাতির উদ্ভিদটি বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যান গাজীপুরের মধুপুর শালবনে থাকার তথ্য জানা যায়। হয়তো আরও কয়েক স্থানে থাকতে পারে। তবে এ গাছটি বিলুপ্তির পথে। বিভিন্ন সূত্র মতে, উপমহাদেশে উদ্ভিদটি দুর্লভ এবং উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর সরকারি কলেজে একটি মাত্র বিদ্যমান। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে দেখে আসছি। জ্যৈষ্ঠের পর ফুল ফুটেছে। তবে ক্যাম্পাসের এ গাছটিতে ফুল হলেও এখনো ফল দেখা যায়নি। টিস্যু কালচার পদ্ধতি প্রয়োগ করে বিলুপ্ত প্রজাতির গাছটির চারা উৎপাদনে আরও উন্নত গবেষণা হতে পারে, এ জন্য দেশ-বিদেশের উদ্ভিদ গবেষকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

সর্বশেষ খবর