২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১০:৩৩

পুকুর পাড়ে বস্তায় আদা চাষে সাফল্য

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

পুকুর পাড়ে বস্তায় আদা চাষে সাফল্য

কৃষি জমি ব্যবহার না করে, বাড়ির পুকুর পাড়ের খালি জায়গায় বস্তায় আদা চাষে সাফল্য এনেছেন সৌখিন কৃষক ফয়ছল আহমেদ (৩০)। সীমিত খরচ, কম জায়গা আর অল্প শ্রমে, আদার ব্যতিক্রমী চাষে ব্যাপক সাড়া পেলেছেন তিনি। ইতিমধ্যে আশানুরুপ ফলন শুরু হওয়ায় এ থেকে খরচ বাদে আশা করছেন দুই লক্ষ টাকার অধিক মুনাফার।

সরেজমিন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম শ্বাসরাম গ্রামের কৃষক ফয়ছল আহমেদ’র আদা প্রদর্শনী দেখতে যাওয়া হয়। তখন মাঠ পরিদর্শন করছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় ও উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা বিজিত আচার্য্য। দেখা যায়, পুরো পুকুর পাড় ছেয়ে গেছে সবুজে। থরে থরে সাজানো বস্তায় বেড়ে উঠছে আদা গাছ। বেশ সুন্দর পাতার রং আর সতেজতা দেখেই যে কেউ বুঝতে পারবেন যে, এ বাগানে ফলন কেমন হবে।

এ সময় কথা হলে কৃষক ফয়ছল বলেন, পুকুর পাড়ের অব্যবহৃত খালি জায়গায় ইচ্ছে ছিল কিছু একটা চাষ করার। এ থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শ-সহায়তায়, ‘ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি এসিসটেন্স প্রজেক্ট (ফ্রিপ)’র বস্তায় আদা প্রদর্শনী নেই। কৃষি অফিস নীলফামারির ডোমরা উপজেলা থেকে সংগ্রহ করে দেয় বারি আদা-১ জাতের চারা। সাথে দেয়া হয় নগদ অর্থ, সার ও বস্তা। গত এপ্রিল মাসের ১৭ তারিখ নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ৫শ বস্তায় একযোগে ২টা করে রোপণ করি চারা কন্দ। রোপণের ১০-১৫ দিনের মধ্যে গজায় গাছ। বর্তমানে প্রতি বস্তায় গাছ আছে ৮-১৭টি। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ফলন। বিক্রি করা যাবে সামনের ফেব্রুয়ারি মাসে। বস্তা প্রতি আদা তুলতে পাবরো দেড় থেকে তিন কেজি। প্রতি কেজি আদার বাজার মূল্য রয়েছে ২শ টাকা। সে অনুযায়ী খরচ ১৫ হাজার বাদে ২ লক্ষ টাকার অধিক আদা বিক্রি করতে পারবো।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপজেলায় অধিকাংশ ফসলি জমি এঁটেল মাটি এবং এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত বৃষ্টি চলমান থাকায় এই অঞ্চলে আদা গজানোর পরে গাছ মারা যায়। আবার সেপ্টেম্বর মাসের পর যখন আদার কন্দ বৃদ্ধি শুরু হয় তখন মাটির রস শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায়। বিধায়, আদার কন্দের বৃদ্ধি বাঁধাপ্রাপ্ত হয় এবং ফলন কমে। বস্তায় আদা চাষ করলে এই দুটি সমস্যা হয় না। বস্তায় মাটির ৩৫-৪০ শতাংশ জৈব সার ব্যবহার করার কারণে আদার কন্দের ভালো বৃদ্ধি হয়। ফলনও ভালো হয়। আশারাখি উপজেলায় ভবিষ্যতে বস্তায় আদা চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

সর্বশেষ খবর