টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের পানি কমতে শুরু করলেও নষ্ট হয়ে গেছে বিস্তর ফসলি জমি। কংস নদীর পানি বিপদসীমার নিচে নামলেও নিষ্কাশন সুবিধা না থাকায় ধীরগতিতে নামছে পানি। যে কারণে গত পাঁচদিনে জেলার চার উপজেলার ২২ হাজার হেক্টর জমির ফসল একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় এখনো পানিবন্দীদের রান্না খাওয়া অনিশ্চিত। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চোখে মুখে অন্ধকার। ভুক্তভোগীরা চান স্থায়ী সমাধান।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এবারের আকস্মিক বন্যায় ভেঙ্গে যায় নেত্রকোনার পুর্বধলাসহ বিভিন্ন এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। ফলে গত পাঁচদিন ধরে জেলার দুর্গাপুর, পুর্বধলা, কলমাকান্দা ও সদরের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। তলিয়ে যায় বিস্তর ফসলি জমি। তবে গত দুদিন ধরে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্ত বাড়িঘরে থাকা পানি সরতে হয়তো আরও দেড় দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে বলে জানান ভুক্তভোগী জেলে মো. জাহাঙ্গীর।
এদিকে গত কয়েক দফা বন্যার কারণে এ নিয়ে তিন দফায় আমন অবাদ করেও অবশেষে শেষ রক্ষা হয়নি কৃষক সোনামিয়ার। অনেক কৃষকের ধানের উপর নির্ভরশীল থাকলেও এবার একেবারেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।বাট্টাপাড়া গ্রামের কৃষক হাদিস মিয়া জানান, তারা ৫ ভাই মিলে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ২শ কাঠা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার সব তলিয়ে একাবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নরুজ্জামান জানান, জেলায় এ বছর রোপা আমনের আবাদ হয়েছিলো ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৯শ হেক্টর। তারমধ্যে বন্যায় গত ৫ দিনে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে মোট ২২ হাজার ৬৪১ হেক্টর ধান ও ১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর সবজি নষ্ট হয়েছে। জেলার মোট ৫ লক্ষাধিক কৃষকের মাঝে ৬৯ হাজার ৪৫০ জন কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আনুমানিক ২৯৩ কোটি টাকা মূল্যের ধান নষ্ট হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই আমন আবাদের সময় শেষ। যে কারণে আবার আবাদ করার সুযোগ নেই। ইরি বোরো মৌসুম চলে আসায় হয়তো পরবর্তী প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে তাদের ক্ষতি পোষাতে প্রনোদণা দেয়া হতে পারে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল