ছবিতে হাতে যে কলমটি দেখছেন সেটি মেটাডোর নামের একটি দেশীয় কোম্পানির তৈরী কলম। হাজার কিলোমিটার দূরে থেকে এখনো দেশীয় কলমটি দিয়ে লিখতে আনন্দবোধ করি। এমনভাবে দেশের বাইরে আসার পর সবসময় চেষ্টা করি দেশের উৎপাদিত জিনিসগুলো ব্যবহার করতে।
বলতে পারেন এটা আমার মরহুম বাবার কাছ থেকে শেখা। ছোটকালে বাবার সাথে বাজারে গেলে দেখতাম উদাহরণ স্বরূপ পিয়াজ কিনতে গেলে দোকানদারকে আগে জিজ্ঞাসা করতেন কোনগুলো দেশীয় পিয়াজ। তখন সম্ভবত দেশীয় পিয়াজের দাম বেশি ছিল। তবুও দেশী পিয়াজই কিনতেন। দেশের বাইরে এসে হাতে লেখার কলমটি এখনো দেশ থেকে নিয়ে আসি। গোসলের পরে শরীর মোছার তোয়ালেও দেশের তাঁতির হাতের তৈরি। মাথার চুল আঁচড়ানোর চিরুনীও দেশীয়। আর ক্লাসের নোট লেখার খাতাগুলো বসুন্ধরা কোম্পানির। পরনের টি-সার্ট সহ বেশিরভাগ কাপড়ই দেশ থেকে নিয়ে আসা। দাঁত মাজার ব্রাসও দেশীয় সাথে ঠান্ডা আবহাওয়ায় এখনো মেরিল প্রেটোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে থাকি। ইরানি ক্লাসমেট অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করে, তোমাকে দেখি তোমার লেখার কলমটিও তুমি দেশ থেকে নিয়ে এসেছো। এমনটা কেন? জবাব খুব সহজভাবেই বলি, দেশের জন্য প্রবাস থেকে কিছু করতে পারিনা। এগুলো দেশের প্রতি কিঞ্চিৎ ভালবাসা প্রকাশের চেষ্টা মাত্র।
জিনিসগুলোর মুল্য খুব সামান্য তবে আমি অবশ্য এটি দামের হিসেবে কখনো মেপে দেখিনি, আমি দেখেছি এটিকে দেশের প্রতি ভালবাসা হিসেবে। এই ভালবাসা লোক দেখানো না, এই ভালবাসা মনের ভেতর থেকে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য শত শহিদের প্রতি অজস্র শ্রদ্ধা থেকে আসা। সব সময় শুভ কামনা লাল সবুজের জন্য।
লেখক: শিক্ষার্থী, ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি) ইস্পাহান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইরান।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন