ঢাকা, শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

নেপাল থেকে এসেছে মিরপুর ও চট্টগ্রামে উদ্ধারকৃত 'জেল বিস্ফোরক'
অনলাইন ডেস্ক

নেপাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে পাচার হয়েছিল মারাত্মক ‘জেল-বিস্ফোরক’। সেই জেল-বিস্ফোরক দিয়ে তৈরি জ্যাকেট পরানো হচ্ছে জামাআতুল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ)-এর আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্যদের। এই জেল-বিস্ফোরকসহ জ্যাকেট চট্টগ্রাম ও মিরপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী। ভারতীয় গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার কলকাতার দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় এমনই সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

খবরে আরও বলা হয়, খাগড়াগড় কাণ্ডে ধরপাকড় সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে যে এখনো সক্রিয় জামাআতুল মুজাহিদিন (বাংলাদেশ)-এর স্লিপার সেলগুলো এটা তারই প্রমাণ। সমানে কাজ করছে জেএমবির মডিউলগুলো। চলতি মাসের গোড়াতেই ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পারেন, নেপাল থেকে পাচার হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে বিপুল পরিমাণ জেল-বিস্ফোরক। আরডিএক্সের মতোই শক্তিশালী এ জেল-বিস্ফোরক ভারতে এসেছে বলে আগে শোনা যায়নি। গোয়েন্দা সূত্রটি জানিয়েছে, নেপালে এখন দাউদ ইব্রাহিমের ডি কোম্পানি সক্রিয়। নেপাল থেকে সীমান্ত পেরিয়ে এ মারাত্মক জেল-বিস্ফোরক পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। তারপর সেই বিস্ফোরক আবার উত্তরবঙ্গ সংলগ্ন সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকে বাংলাদেশে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রটি জানিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দারা সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে আটক করার পরে তাদের কাছ থেকে জেলি জাতীয় থকথকে একটি রাসায়নিক পাওয়া যায়। পরীক্ষার পরে জানা যায়, সেটি একটি ভয়ঙ্কর বিস্ফোরক। পরে আল-কায়েদা জঙ্গিদের ব্যবহার্য বিস্ফোরকের তালিকায় ছিল জেল-বিস্ফোরক। গোয়েন্দা বাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রায় ৩৬ ধরনের জেল-বিস্ফোরক রয়েছে। কোনো কোনো জেল-বিস্ফোরক আরডিএক্সের চেয়েও শক্তিশালী। পশ্চিমবঙ্গে এর আগে কখনো জেল-বিস্ফোরকের মতো শক্তিশালী বিস্ফোরক পাচার হয়ে আসেনি।

খবরে আরও বলা হয়, দেশটির গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন এ জেল বিস্ফোরক নেপালে কীভাবে এলো এবং তা জেএমবি জঙ্গিরা কী করে হাতে পেল! গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য, ভারতীয় আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ছোট রাজন সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে নেপাল এখন ডি কোম্পানির মুক্তাঞ্চল। অস্ত্র এবং বিস্ফোরক পাচার ডি কোম্পানির অন্যতম ব্যবসা। দাউদের চিরশত্রু ছোট রাজনের গ্যাংয়ের আগে দাউদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে তুলেছিল। এর পিছনে ভারতীয় এজেন্সির মদদও ছিল। পাশাপাশি, দুই বাংলাদেশি জেলবন্দী ‘ডন’ তনভির ইসলাম জয় এবং সুব্রত বায়েনও দাউদের সঙ্গে লড়াই করার মতো অবস্থায় নেই। ফলে নেপাল দিয়ে ভারত হয়ে বাংলাদেশে জেল-বিস্ফোরক পাচারের সম্ভাবনা ডি কোম্পানিরই বেশি। এর পেছনে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়েরও মদদ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দাদের ধারণা। খাগড়াগড় থেকে যেমন ল্যান্ডমাইন জাতীয় আইইডি তৈরি করে বাংলাদেশে পাচারের কাজ চলত, তেমনই নেপাল থেকে বিস্ফোরক পাচার করে বাংলাদেশে নাশকতা ঘটানোর ছক কষা হয়েছিল। জেএমবি সম্প্রতি যে আত্মঘাতী স্কোয়াড তৈরি করেছে বলে জানা গেছে তারই জন্য পাচার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।

বিডি-প্রতিদিন/২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫/মাহবুব



এই পাতার আরো খবর