ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শিশু-মস্তিষ্কে স্থায়ী ছাপ ফেলে ভায়োলেন্স
অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, যে সব শিশু সন্ত্রাস দেখেছে, তাদের শরীরে যদি যুদ্ধ বা সন্ত্রাস দাগ না-ও রেখে থাকে, তাদের মনকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।

দুই দুইটি বিশ্বযুদ্ধের পরও পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত চলছে ঠাণ্ডা লড়াই, ছায়াযুদ্ধ আর স্নায়ুযুদ্ধের। বদলে গিয়েছে পৃথিবীর মানচিত্র। উধাও হয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশ। একটি প্রজন্ম যাকে স্বভূমি হিসেবে জেনেছিল, তা থেকে উচ্ছিন্ন হয়ে নতুন দেশে তার পরিচয় দাঁড়ায় শরণার্থীর। যাদের কারণে তাকে দেশ ছাড়তে হয়েছিল, তারাও কি ভাল ছিল তার পর? তাদেরও পার হতে হয়েছে গৃহযুদ্ধ, গোষ্ঠী সংঘাত। 

যাদের দেশে প্রত্যক্ষ যুদ্ধ আর সন্ত্রাস দেখা দেয়নি, তাদের জীবনকেও ওলট-পালট করে দেয় গত ৬০-৭০ বছরের বদলে যাওয়া চিন্তা-কাঠামো, জীবন-যাপন পদ্ধতি, পারিবারিক জীবনের ছাদ। ‘দ্য ওয়ার উইদিন’ একটা বড় সমস্যা হয়ে দেখা দেয় প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে। পারিবারিক সন্ত্রাস এসে ভেঙে দিয়ে যায় শৈশব নামক একটা পর্যায়কে। 

গবেষণা বলছে, এই কালপর্বে যে সব শিশু সন্ত্রাসকে প্রত্যক্ষ করেছে, তাদের দেহে যদি যুদ্ধ বা সন্ত্রাস দাগ নাও রেখে থাকে, তাদের মন নামক পদার্থটিকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। আর এই ক্ষত নিরাময়ের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ঘর বা বাহির— যে কোনও সন্ত্রাসই শিশু-মস্তিষ্কে স্থায়ী ছাপ রেখে যায়। 

দু’বছর বয়সে যখন স্নায়ুপথ তৈরি হয়, তখন থেকে কৈশোর পর্যন্ত শিশুদের মনোবিকাশকে বিরাটভাবে প্রভাবিত করে যে কোনও রকমের ভায়োলেন্স। তার আবেগ-অনুভূতিকে একেবারেই অন্য খাতে বইয়ে দেয় ‘ওয়ার উইদিন’ এবং ‘ওয়ার উইদাউট’।

ইউনিসেফ ও অন্যান্য সংস্থার গবেষকরা বিশেষ করে দেখাচ্ছেন এই সমস্যাটিকে। সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর ১ বিলিয়ন শিশু শরীরী নির্যাতনের শিকার হয়। গৃহ সন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করে ২৭৫ মিলিয়ন শিশু। বিশ্বের মোট শিশু-সংখ্যার একটা বিরাট অংশ মনোবিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে প্রতিনিয়ত। দেখা দেয় স্মৃতিলোপ, যুক্তিপ্রবণতার অভাব, উদ্বেগ, অবসাদ এসে থানা গাড়ে শিশু-মস্তিষ্কে।

এর সঙ্গেই রয়েছে শিশুদের উপরে যৌন-নির্যাতনের ঘটনা। রয়েছে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ইত্যাদিও। ‘উইদাউট ভায়োলেন্স’ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তুলে ধরেছে এই চিত্র, পরিসংখ্যানসহ। সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও খুব দেরি হয়ে যায়নি। শিশু-জগতকে ভায়োলেন্স থেক বাঁচানোর অনেক রাস্তাই আজও খোলা রয়েছে। এবং তারা এই কাজে পুরোপুরি নিয়োজিত।   

সূত্র: এবেলা

বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা



এই পাতার আরো খবর