ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বিকারগ্রস্ত ছিলেন মতিন: প্রাক্তন স্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

মারধরের মাত্রাটা বেড়েই চলছিল। শেষ পর্যন্ত এক দিন ঠিক করলেন, পালাতে হবে। গাড়িতে উঠতে যাবেন, ঠিক সেই সময়েই পিছন থেকে তাঁর হাতটা চেপে ধরে মতিন। প্যান্টের পিছনের পকেট থেকে কী যেন একটা বার করার চেষ্টাও করে। বন্দুক নয় তো? কোনও মতে গাড়িতে উঠেই ছুট দেন ইউসুফি।

সাত বছর আগের কথা। এটাই শেষ দেখা সিতোরা ইউসুফি ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী ওমর সিদ্দিক মতিনের। ২০০৮-এ একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আলাপ দু’জনের। বেশ হাসিখুশি ছেলেটা। ইউসুফির ভাল লেগেছিল মতিনকে। ২০০৯-এ বিয়ে করেন তাঁরা। ‘‘কিন্তু সপ্তাহ কয়েকের মধ্যে ছবিটা বদলাতে থাকে’’, বললেন ইউসুফি। ‘‘কারণ ছাড়াই গায়ে হাত তুলত। বাড়ির কাজ হয়নি কেন, কাপড় ঠিক মতো ধোয়া হয়নি কেন— এসব ব্যাপারে আমাকে মারধর করত।’’ 

বিয়ের পরেই ইউসুফি জানতে পারেন, ‘বাই-পোলার’ মানসিক রোগে আক্রান্ত মতিন। অল্পতেই রেগে যেত। সে যে বিকারগ্রস্ত, তা সে-দিনের পুলিশদের কথা থেকেও স্পষ্ট। 

সমকামীদের প্রতি মতিনের তীব্র ঘৃণা কিন্তু বহু দিন ধরেই স্পষ্ট ছিল, জানিয়েছেন ইউসুফি। মতিনের সমকাম-বিরোধিতার পিছনে তার বাবা সিদ্দিক মির মতিনের প্রভাব রয়েছে, বলছেন গোয়েন্দারা। কারণ সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘‘সমকামীদের শাস্তি দেবেন ঈশ্বর। তা নিয়ে মানুষের মাথা ঘামানো ঠিক নয়।’’ তাঁর দাবি, মতিনের সমকাম-বিরোধিতাই এই হত্যালীলার কারণ। তাঁর কথায়, ‘‘দু’টি ছেলে চুমু খাচ্ছিল। দিন কয়েক আগে মিয়ামিতে এই দৃশ্য দেখেই চটে যায় মতিন।’’

ইউসুফি যদিও বলেছেন, ‘‘ধার্মিক হলেও মতিনকে তখন মৌলবাদী মনে হতো না।’’ মতিনের বাবা দীর্ঘদিন ধরেই তালিবানের সমর্থক। মতিন নিজেও সহকর্মীদের কাছে মৌলবাদের সমর্থনে কথা বলেছে। যার জন্য ২০১৩-১৪ সালে এফবিআইয়ের কাছে একাধিকবার ডাক পড়েছিল মতিনের। তেমন কোন প্রমাণ না মেলায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এক বছর আগে ফেসবুকে ইউসুফির সঙ্গে ফের যোগাযোগ করার চেষ্টা করে মতিন। কিন্তু তাকে ব্লক করে দেন ইউসুফি। ‘‘সে দিন ভাগ্যিস পালিয়েছিলাম,’’ হাঁফ ছেড়ে বলছেন মতিনের প্রাক্তন এই স্ত্রী।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

বিডি প্রতিদিন/১৪ জুন ২০১৬/হিমেল-০৮



এই পাতার আরো খবর