ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চাপ রেখেই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করার চেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক

একদিকে ইসলামাবাদ, অন্যদিকে বেইজিং। একই সঙ্গে বৈরিতার একাধিক দরজা খোলা রাখাটা বিপজ্জনক বলে মনে করছে মোদি সরকার। তাই ব্রিকস সম্মেলনে হাত পোড়ানোর পর চীনের সঙ্গে তিক্ততা কমানোর চেষ্টা শুরু করছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে বেইজিংয়ের উপরে চাপও বজায় রাখা হচ্ছে। তবে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়।

চলতি সপ্তাহে হায়দরাবাদে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও চীনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াং চিয়েছির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, এই ‘ঘরোয়া’ বৈঠকটির মাধ্যমে কৌশলগত ক্ষেত্রে দু’দেশের মতপার্থক্য কমানোর চেষ্টা চালাবে নয়াদিল্লি। খোলামেলা আলোচনায় তোলা হবে ‘পাকিস্তান ফ্যাক্টর’ ও মাসুদ আজহার প্রসঙ্গও। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, ভারতের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে চীনও। ফলে এই বৈঠকে তাদেরও আগ্রহ রয়েছে। ইয়াং চিয়েছি ওই বৈঠকে পরিস্থিতির গুরুত্ব মাপার একটা সুযোগ পেয়ে যাবেন।

মাসুদ আজহারকে জাতিসংঘের জঙ্গি তালিকায় রাখা বা পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী (এনএসজি)-তে ভারতকে নেওয়ার প্রশ্নে বেইজিং কার্যত ‘চীনের প্রাচীর’ হয়ে রয়েছে। তবে কৌশলে বেইজিংয়ের উপরে নিয়ন্ত্রিত চাপও রেখে যেতে চাইছে দিল্লি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে হায়দরাবাদে ডোভাল চীনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা চিয়েছির সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক করলেও প্রায় একই সময়ে নয়াদিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠক করবেন ভিয়েতনামের ডেপুটি পাবলিক সিকিউরিটি মন্ত্রী বুই ভান থান-এর সঙ্গে। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে বিতর্কের পরে চীন-ভিয়েতনাম সম্পর্ক এখন আরও খারাপ। ফলে ভিয়েতনামের সঙ্গে সমুদ্র নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক করে নয়াদিল্লি প্রকারান্তরে বেইজিংকে কিছুটা চাপে রাখতে চাইছে।

চীনকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ফিলিপাইন, জাপান, ভিয়েতনাম, অস্ট্রেলিয়া, সর্বোপরি আমেরিকার মতো দেশের সঙ্গে অক্ষ তৈরির চেষ্টা গত সরকারের আমল থেকেই চলছে। তাতে আরও কিছুটা হাওয়া জুগিয়েছেন মোদি। গত মাসে হ্যানয় সফরে গিয়ে তিনি ভিয়েতনামের সঙ্গে সমুদ্র-মৈত্রীর নিশান উড়িয়ে এসেছেন। নিঃসন্দেহে সেটা চিনের ঘোষিত সমুদ্র-এলাকায় চাপ তৈরিরই একটা কৌশল। সূত্রের খবর, ভিয়েতনামের মন্ত্রীর সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে এই এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারির বিষয়টিকে জোরদার করা নিয়ে আলোচনা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৯ নভেম্বর জাপান সফরে যাচ্ছেন দু’দিনের জন্য। ওই সফরে দু’দেশের মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে চুক্তি হওয়ার কথা। স্বাভাবিকভাবেই বেইজিংয়ের কাছে এটিও যথেষ্ট অস্বস্তির। বেইজিংকে চাপে ফেলছে চীনা পণ্য বয়কটের ডাক, দালাই লামার অরুণাচল সফরে সবুজ সংকেত দেওয়ার মতো বিষয়গুলিও। যা নিয়ে ক্ষোভ গোপন করতে পারছে না বেইজিং। এসব নিয়ে পাল্টা হুমকিও দিচ্ছে তারা। এই পরিস্থিতিতে ডোভালের সঙ্গে বৈঠকে চিয়েছির তরফে জল মাপার একটা চেষ্টা থাকবে বলেই মনে করছে দিল্লি। কারণ কোনভাবেই ভারতের বাজার হারাতে চায় না বেইজিং।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

বিডি-প্রতিদিন/ ০১ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ



এই পাতার আরো খবর