ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

এজবাস্টন খাদের ধারে আজ গঙ্গা বনাম পদ্মা
অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে বার্মিংহামের এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখতে এই ম্যাচটি বাংলাদেশের বাঁচা-মরার। কেননা ৭ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয় নম্বরে অবস্থান বাংলাদেশের। এই ম্যাচে হারলেই সেমিতে উঠার লড়াই থেকে ছিটকে পড়বে বাংলাদেশ।

প্রয়াত ভূপেন হাজারিকা যখন কালজয়ী গান-গঙ্গা আমার মা পদ্মা আমার মা/ ও আমার দুই চোখে দুই জলের ধারা/ মেঘনা যমুনা। 

তিনি যখন এই গানটা প্রথম রেকর্ড করেন, তার কেন, দুই বাংলার সঙ্গীতজগতের কারও কল্পনাতেও আসেনি যে এমন একদিন উপস্থিত হতে পারে। যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ককে প্রকাশ্যে স্বদেশীয় সমর্থকদের আবেদন করতে হবে, আপনারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত ম্যাচ নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধ করুন। নিজের টিমকেও সতর্ক করতে হবে।

৪ বছর আগে মেলবোর্নে যখন বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত-বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় পারিবারিকসূত্রে শ্রীহট্টের কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য একটা ফেসবুক পোস্ট দিয়েছিলেন, ‘আজ নিজের ভাষার সঙ্গে নিজের দেশের লড়াই। হৃদয় মুচড়ে নিজের দেশের সঙ্গে আছি।’ 

মঙ্গলবার বিশ্বকাপের এত তাৎপর্যপূর্ণ ম্যাচ যে বিতর্কের অন্য মুখ বা পৃথক প্রেক্ষিত উপস্থিত হওয়ার কথাই নয়। এজবাস্টন প্রেসবক্সে বসে দেখছি ইংরেজদের সামনে বিপর্যয়ের সাক্ষাৎ আয়না চোখের সামনে এখনও হাজির। 

বাংলাদেশ বিশ্বকাপে চমকপ্রদ ক্রিকেট খেলছে। তিনশোর ওপর রান এমন নিশ্চিন্ত ভঙ্গিতে তাড়া করে একাধিকবার লক্ষ্যে পৌঁছে যাচ্ছে যে পুরনো অ্যালবাম দেখার বিলাসিতা চলবে না।

এটা নতুন সময়! মাশরাফিদের নতুন টিম! একটু বেচাল হলে ম্যাচ চলে যাবে এবং এজবাস্টন না জিতলে কে বলতে পারে ভারতের সেমিফাইনাল ভাগ্য উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়বে না?  যতই তাদের এগারো পয়েন্ট তোলা থাক। তখন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ জিততেই হবে। নইলে চলে যেতে হবে নেট রান রেটের মতো অমর্যাদাকর গলিঘুঁজিতে। 

বাংলাদেশের আঙ্গিক আরও সহজ। ইন্ডিয়া ম্যাচ জিতলে মঙ্গলবার এজবাস্টনে বিশ্বকাপ শেষ! অন্যদিকে ইন্ডিয়া ম্যাচ জিতলেও আবার লর্ডসে পাকিস্তানকে হারাতে হবে। তবে ওঠা যাবে শেষ চারে।

এজবাস্টনে ধোনি ও তার সতীর্থদের ব্যর্থতায় পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশও আক্রান্ত! ফারাক্কার পানির সঙ্গে সেই উষ্মাও না ম্যাচের বাউন্ডারির সীমানার বাইরে হাজির হয়! আরও একটা দুশ্চিন্তা। ক্রিকেটীয় নৈপুণ্যে এত সব সম্পদ নিয়ে ভারত যেমন নানান অবিশ্বাস্য ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, বাংলাদেশ সেখানে নতুন প্রত্যয়ে ঝলমলে। ভারত যখন আহত বিজয় শঙ্করের বদলে স্ট্যান্ড বাই লিস্টের আশেপাশে না থাকা মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে উড়িয়ে এনে নির্বাচক কমিটির কোহলির হাতের পুতুল হয়ে যাওয়া প্রমাণ করছে। 

তখন সাকিব আল হাসান নিজেকে পুনরায় উপস্থিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা তারকা হিসেবে! ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ৪৭৬ রান ও ১০ উইকেটে মোড়া সাকিবের ক্রিকেটীয় প্রত্যাবর্তন সৌরভ গাঙ্গুলী গঙ্গোপাধ্যায়ের চেয়ে কোনও অংশে কম রক্তমাংসের নয়। কী হবে তিন নম্বরে নেমে আবার যদি তিনি বাংলাদেশ ইনিংস পরিচালনা করেন!

ভারত মুখে যাই বলুক, ভেতরে ভেতরে দমে আছে। চব্বিশ ঘণ্টা আগে তাদের এমন ব্যতিক্রমী দিন গিয়েছে যে রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি পারফর্ম করার পরেও টিম হেরেছে। এটা শেষ কবে হয়েছে যে ওয়ান ডে ক্রিকেটের দুই ব্যাটিং গুরু রান করার পরেও টিম জিততে ব্যর্থ? ভাবনার শীতল স্রোত বইবেই যে কী হবে যদি এদের একজন রান না পান?

এর আগে বিশ্বমঞ্চে ভারতের বিপক্ষে একবারই জয় পায় বাংলাদেশ। ২০০৭ বিশ্বকাপের ১৭ মার্চ পোর্ট অব স্পেনে শচীন-সৌরভদের ৫ উইকেটে হারায় টাইগাররা।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন



এই পাতার আরো খবর