ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চিতিঠোঁট গগনবেড়
আলম শাইন
চিতিঠোঁট গগনবেড়

ভিন্ন ধাঁচের চেহারা, আকারেও বৃহৎ। শীত মৌসুমে দেখা মিলে হাওর-বাঁওড় বা সামুদ্রিক জলাশয় অঞ্চলে। বিচরণ করে একাকী, জোড়ায় কিংবা ঝাঁক বেঁধে। বাংলাদেশে খুব একটা নজরে পড়ে না; কালেভদ্রে নজরে পড়ে। ২০২০ সালে দেশের উত্তরবঙ্গে দেখা যায়। পরবর্তীতে অন্য কোথাও দেখা গেছে বলে জানা যায়নি। 

বাংলাদেশ ছাড়াও বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক, লাওস, চীন ও দক্ষিণ কম্বোডিয়া পর্যন্ত। সমগ্র বিশ্বেই এদের অবস্থান সন্তোষজনক নয়। শিকারিদের অত্যাচারে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে এরা। এছাড়াও জলাশয় সংকটের কারণে প্রজাতিটি হারিয়ে যেতে বসেছে। বলা যায় এখন অতি বিরল পরিযায়ী পাখির তালিকায় রয়েছে এরা। 

পাখির বাংলা নাম : ‘চিতিঠোঁট গগনবেড়’, ইংরেজি নাম : ‘স্পট বিল্ড পেলিক্যান’, (Spot-billed Pelican)। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৫২ সেন্টিমিটার। ওজন ৪.১-৫.৭ কেজি। মাথার ঝুঁটি ও ঘাড়ের রঙ গাঢ় ধূসর। পিঠ সাদা। ডানার ওপরে গোলাপি আভা। বুক ও পেটের দিকে হলদেটে। ওড়ার প্রাথমিক পালক কালো। ঠোঁট বড়। ঠোঁটের নিচে কমলা-হলুদ রঙের চামড়ার থলে। উপরের ঠোঁটের মাঝে রয়েছে লম্বা প্লেট। নিচের ঠোঁটের কিনারা ধূসর। চোখের চারপাশে পালকহীন চামড়া। পা ও পায়ের পাতা গোলাপি। কপালে সাদা পালক, যা ওপরের ঠোঁটের গোড়ায় মিলিত হয়েছে। প্রজননের বাইরে গলার নিচের থলে গোলাপি রং ধারণ করে। তখন মাথার ঝুঁটির পালক ও গায়ে হলুদের আভা থাকে না। অপ্রাপ্ত বয়স্ক পাখির ডানায় বাদামির পরিমাণ বেশি থাকে। ঠোঁটে চিতি থাকে না, যা বয়স্ক পাখিদের থাকে। 

প্রধান খাবার : মাছ। শিকারের কৌশল বেশ মজাদার। এরা দলবদ্ধ হয়ে ঠোঁট ফাঁক করে মাছ তাড়া করে নিজেদের থলেতে ঢুকিয়ে ঝাঁকুনি দিয়ে গিলে ফেলে। প্রজনন মৌসুম ভারতে অক্টোবর। শ্রীলঙ্কায় মার্চ থেকে এপ্রিল। এ ছাড়াও অঞ্চলভেদে প্রজনন মৌসুমের হেরফের রয়েছে। বড় গাছে দলবদ্ধভাবে বাসা বাঁধে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে সরু ডালপালা। বাসা অগোছালো। মাচা আকৃতির। ডিম পাড়ে ৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ৩০ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হতে সময় নেয় ৬০-৯০ দিন। পূর্ণ যৌবনপ্রাপ্ত হতে সময় লাগে ৩০ মাস।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত



এই পাতার আরো খবর