ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রাক্ষসী জালে মাছের সর্বনাশ!
শেরপুর প্রতিনিধি
জব্দ করা জাল

মাছ ধরার জালের নাম রিং জাল বা চায়না দুয়ারি। এসব জালকে স্থানীয়রা রাক্ষসী জাল বলে চেনে। শেরপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খালে বিলে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব বেআইনি রাক্ষসী জাল। মাছ ধরতে জালগুলো এত আধুনিক যে জালের কাছে মাছ গেলেই আর রক্ষা নেই। জালের গায়ে মাছের লেজ লাগলেও জাল গিলে নেয় অতি ছোটবড়  মাছ। এসব আধুনিক প্রযুক্তির রাক্ষসী জালে বিলের সাধু পানির মাছের সর্বনাশ হচ্ছে। খালে বিলে আর আগের মত মাছ পাওযা যাচ্ছে না। মাছ ধরার পেশায় জড়িতরা এই তথ্য দিয়েছেন।

জানা গেছে, কারেন্ট জাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে এসব জাল। বড় খাল বা বিলে পাতা হচ্ছে জাল। মাছ ধরতে ৪/৫ ঘণ্টা পরপর তোলা হয় এসব জাল। জাল তোলার পর দেখো যায় বড় মাছ তো আছেই ক্ষদ্র পোনা মাছগুলোও রক্ষা পাচ্ছে না এসব জাল থেকে। গোপনে বা  প্রকাশ্যেই এসব জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। রাক্ষসে জালগুলো অজগর সাপের মত। আবার অজগর আকৃতির এসব জালে আধুনিক প্রযুক্তি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে রিং। রিং লাগানো জাল গুলোতে থাকছে অসংখ্য পকেট। জালের কাছে মাছ গেলেই জালের পকেটে ঢুকে পড়ছে মাছ। জালগুলো অনেক লম্বা ও প্রশস্থ। একশ মিটারের একটি জাল তৈরি করতে বিশ হাজারের মত টাকা লাগে। কোনকোন জালের দৈর্ঘ্য পাঁচশ থেকে ১৫শ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এলাকার প্রভাবশালিরাই এসব জাল তৈরি করে বলে সূত্র জানিয়েছে। শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতি উপজেলার খালবিলে অহরহ ব্যবহার করা হচ্ছে এসব রাক্ষসে জাল। নালিতাবাড়ীর নাকশি খাল, চেল্লাখালি খাল, বৌলি বিল, মালিঝি খাল ও ঝিনাইগাতি উপজেলার বগাডুবি, বাঙামাটি খাল, মালিঝি খাল, কালি নগর বিলসহ অসংখ্য স্থানে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব রাক্ষসী জাল।

এসব জালের অবাধ ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন ও জেলার মৎস বিভাগ। গতকাল ৪ অক্টোবর ঝিনাইগাতি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস বিভাগ  মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫০০ মিটার চায়না দুয়ারী জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দিয়েছে। 

জেলা মৎস কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত জুন থেকে এ পর্যন্ত পাঁটটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৭৮০০ মিটার রাক্ষসে ও কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাক্ষসে জাল ধরতে ও বিক্রি ঠেকাতে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর