ঢাকা, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কীটনাশক ব্যবহারে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নওগাঁর কৃষক
বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ:

উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় সচেতনতার অভাবে কৃষক জমিতে নিরাপদ কীটনাশক ব্যবহার না করায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। কিন্তু এ ব্যপারে কৃষকদের সচেতন করার কোন উদ্দ্যেগ নেই বলে কৃষকের অভিযোগ। দিগন্ত জুড়ে যেদিকে তাকায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়।

ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। উপজেলার প্রতিটি মাঠে জুড়ে ধানের শীষে পড়ছে শীতের শিশির বিন্দু। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে মান্ধাতা আমালে চাষাবাদ পদ্ধতির পরিবর্তে সকল ক্ষেত্রে আধুনিক যান্ত্রিক পদ্ধতির ব্যবহার এখন ব্যপক প্রসার ঘটেনি। উপজেলার প্রতন্ত গ্রামগুলোতে জমি চাষে এখন পাওয়ার টিলারের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও অন্যান্য যন্ত্রপাতির তেমন ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় না। ফলে কৃষক ফসলের চারা লাগানো আগাছা পরিস্কারসহ ফসল কাটা মাড়ায়ের কাজ কৃষি শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল। ফসল প্রতঙ্গ রোগ বালাই থেকে রক্ষায় বিভিন্ন সময় কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। বেশি জমিতে এক সাথে কীটনাশক প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাওয়ার স্প্রে ব্যবহার করা হয়। কৃষক সাধারণত হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। কীটনাশক প্রয়োগ করার সময় ম্যাক্স ও গেøাবস ব্যবহার করার প্রয়োজন হলেও সচেতনার অভাবে কৃষক ও কৃষি শ্রমীক এগুলো ছাড়াই জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করেন। ফলে নাকও মুখ দিয়ে বিষ দেহে প্রবেশ করতে পারে এতে মাথা ঘোরাসহ নানা উপসর্গে ভোগেন কৃষক। কিন্তু এ ব্যপারে গ্রামের কৃষক তেমন অবহিত নই। 

জানা গেছে, গাছ বাড়ার জন্য ১৭টি মৌলিক পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন হয়। এসব পুষ্টি উপাদানের কিছু (হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও কার্বন) আসে পানি ও বাতাস থেকে। বাকি ১৪টি (নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, গন্ধক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্লোরিন, লৌহ, ম্যাঙ্গনিজ, বোরন, দস্তা, তামা, মলিবডেনাম, কোবাল্ট) আসে মাটি থেকে। ১৯৫০ সালের পর থেকে মাটিতে মৌলিক পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আমাদের মাটির ৬-৭টি মৌলিক পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিয়েছে। আগামী ২০-৩০ বছর পর আরও ৩-৪টি পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বেশি ফলন পাওয়ার অভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, কীটনাশক জমিতে দেওয়ার সময় উদ্ভট গন্ধ সহ্য করতে হয়। এছাড়াও ঔষধ প্রয়োগের পর মাথা ঘোরাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয় কিন্তু কিভাবে ঔষধ প্রয়োগ করলে কোন সমস্যা হবে না তা আমার জানা নেই। এব্যাপারে কখন কেউ পরামর্শ দেয়নি। গ্রামের সকল কৃষক এভাবেই জমিতে কীটনাশক প্রায়োগ করেন। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউছার হোসেন জানান, প্রথমত আমরা কৃষককে কীটনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকারই পরামর্শ দিয়ে থাকি। আলোক ফাঁদ এর মাধ্যমে চাষাবাদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। ওসমানি পদ্ধতিতে বিষ প্রয়োগের জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষকরা জৈব সারের চেয়ে রাসায়নিক সার বেশি ব্যবহার করে। তবে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়, তার জন্য আমরা কাজ করছি।

বিডি প্রতিদিন/এএম



এই পাতার আরো খবর