ঢাকা, রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সরিষা-মধুতে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক
নজরুল মৃধা, রংপুর

রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা ও মধুতে স্বপ্ন বুনছেন। গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। ফলে হলুদে হলুদে ভরে রয়েছে এ অঞ্চলের ক্ষেতগুলো। ভাল ফলনের পাশাপাশি ভাল দাম পাওয়ার আশায় কৃষকরা ক্ষেত পরিচর্যা করছে। অনেকে সরিষা ক্ষেতে মধু চাষ করে বাড়তি আয় করছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী এই ৫ জেলায় চলতি মৌসুমে ৩৮ হাজার ৪৩৩ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়। এসব সরিষা ক্ষেতের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২ হাজার ৯৫০টি মৌমাছির বক্স স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে ২ হাজার ১৮৯টি মৌ বক্স স্থাপন করে গত মৌসুমে ২১ হাজার ৮০৬ কেজির বেশি পরিমাণ মধু উৎপাদন হয়েছে।

এছাড়া এসব জেলার বিভিন্ন আম বাগানে ২২২টি মৌ বক্স স্থাপন করে আরও ৫ হাজার ৯০৪ কেজি এবং বিভিন্ন লিচু বাগানে ২৮৫টি মৌ বক্স স্থাপন করে অতিরিক্ত ৫ হাজার ৯০৪ কেজি মধু উৎপন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এবার গত বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।

তবে চাষকৃত সকল সরিষা ক্ষেত এবং আম ও লিচু বাগানে পরিকল্পিতভাবে মৌচাষ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হলে এসব উৎস থেকে প্রতি মৌসুমে মৌমাছির চাষ করে আরও প্রায় শত কোটি টাকা মূল্যের মধু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। এসব উৎপাদিত মধু দেশের স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

রংপুর সদরের উত্তম এলাকার বেশ কয়েকজন সরিষা চাষি জানান, বর্তমানে তাদের সরিষা ক্ষেতের বয়স হয়েছে ৪০ দিনের বেশি। আর দেড় থেকে দুই মাস পরেই এ ফসল ঘরে উঠবে। গত বছর ভাল দাম পাওয়ায় এবারও তারা সরিষা আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলনের আশা করছেন তারা।

তারা জানান, সরিষা আবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন ব্যয় অনেক কম এবং লাভ বেশি। মাত্র ৪টি চাষ দিয়ে এই ফসল ঘরে তোলা যায়। এছাড়া দু’বার পানি ও একবার সার দিয়েই সরিষার আবাদ করা যায়। ৯০ থেকে ১০০ দিনে এই ফসল ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন পাওয়া যায় এক হাজার ৪০০ কেজির মতো। নভেম্বরের প্রথম থেকেই এই ফসল বপন করা হয় এবং ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সরিষা ঘরে তোলা যায়। প্রতি বিঘায় ফলন পাবেন ৫ থেকে ৬ মণ। বিঘায় খরচ পড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এছাড়া মধু চাষ করলে বাড়তি আয় রয়েছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাহবুবর রহমান জানান, রংপুর অঞ্চলে লিচু এবং আম বাগানসহ সরিষা ক্ষেতে মৌচাষ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম চলছে। এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৌচাষ ইতিবাচক প্রভাব হিসেবে ব্যাপক সাফল্যের কাজ করছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর