পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় এবার ব্যাপক সরিষার আবাদ হয়েছে। এসব এলাকা হলুদ রংয়ে রঙিন হয়ে উঠেছে। চাষিরা এবার উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার আবাদ করছে। ডিজেল, সারসহ অন্যান্য উপকরনের দাম বেশি হবার কারণে আমন এবং বোরোর মাঝামাঝি সময়ে বাড়তি ফসল হিসেবে এই সরিষার আবাদে ঝুঁকে পড়েছে তারা।
১ বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা খরচ করে বিঘায় সর্বোচ্চ ৮ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন চাষিরা। তারা বলছেন, দেশি জাতের টরি ৭ এর চেয়ে বারি ৯, বারি ১৬ এবং বারি ১৭ জাতের সরিষার ফলন দ্বিগুণ হয়ে থাকে। জেলার দেবীগজ্ঞ এলাকার নদী অববাহিকায় চলতি বছর প্রায় ১ হাজার বিঘা জমিতে এই উচ্চ ফলনশীন সরিষার আবাদ করেছে চাষিরা।
চাষিরা বলছেন, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে এবার সরিষার আবাদ বেড়েছে দ্বিগুণ। বাজারে বর্তমানে প্রতিমণ সরিষা ২৫ শ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমন মৌসুম শেষ হবার পরে পরে এই অঞ্চলের জমিতে আলু-ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ হতো। সরিষা আবাদে সেচ লাগে না। কীটনাশকও লাগে না। খুব বেশি সারও দিতে হয় না। তাই সরিষায় লাভ বেশি। আমন কাটার পরেই ৬০ দিনের মধ্যেই বাড়তি ফসল হিসেবে এই সরিষার ফলন পাচ্ছে চাষিরা। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফলন পাওয়ার কারণে একই জমিতে বেশ কয়েকটি আবাদও করা যায়।
দেবীগঞ্জ উপজেলার শান্তিনগর এলাকার চাষি শাকিল খান এ বছর ১০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভুট্টাসহ অন্যান্য আবাদ বাদ দিয়ে সরিষার আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি ৩ হাজার টাকা খরচ করে ৮ মণ পর্যন্ত সরিষার ফলন তিনি আশা করেন।
একই এলাকার চাষি মো. ইউসুফ আলী এবার ২ বিঘা জমিতে দেশি টরি ৭ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। তিনি জানান, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি থাকায় তার উৎপাদিত জমির সরিষা মাড়াই করে তিনি নিজেই ব্যবহার করবেন।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ মো. শাখাওয়াত হোসেন প্রিন্স জানান, এবার এই জেলায় সরিষার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। এটা কৃষকের বাড়তি লাভ। এই আবাদ তুলে চাষিরা আবার ২টি ফসল করতে পারবে।
তিনি বলেন, এবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষাসহ বিভিন্ন তৈলবীজ জাতীয় ফসল উৎপন্ন হচ্ছে। চাষিদের আগ্রহ বাড়ায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার, বীজসহ নানা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা