ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কাপ্তাই হ্রদে জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ শুরু
ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে জলে ভাসা জমিতে শুরু হয়েছে চাষাবাদ। তাই ব্যস্ত সময় পাড় করছে কৃষকরা। এ ব্যস্ততা থাকবে আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত রাঙামাটির ৮টি উপজেলায় চলছে বোরধান চাষ। কৃষকরা বলছেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের বুকে অনেকটা দেরিতে ভেসে উঠেছে ডুবো চর। তাই দেরিতে চলছে চাষাবাদ। 

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ বলছে, রাঙামাটি সদর, বরকল, বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, লংগদু, কাপ্তাই, নানিয়ারচর ও জুরাছড়ি উপজেলায় এখন পর্যন্ত জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ৭৫৩ হেক্টর জমিতে। যা চলমান। সময়ের সাথে বাড়তে পাড়ে এ চাষাবাদ জমির সংখ্যা। 

রাঙামাটি জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জুমিয়াদের পাশাপাশি বাঙালীরাও করে এ বোরধান চাষ। তাই বছরের একটা সময় তাদের দীর্ঘ অপেক্ষার পর শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে আসলে ডুবো চরে বোরোধানসহ শীতের নানা প্রজাতির সবজি চাষ করা হয়। আবাদ করা হয় মারফা, সিম, ক্ষিরা ও তরমুজ।

রাঙামাটির বরকল উপজেলার মিতিঙ্গাছড়ির জলেভাসা জমির চাষী সুজিত চাকমা জানান, রাঙামাটি বেশির ভাগ কৃষক জলে ভাসা জমির উপর নির্ভরশীল। পানি কমতে শুরু করলে তারা চাষবাদের প্রস্তুতি শুরু করে। মূলত নভেম্বর মাস থেকে এ বোরোধান চাষ শুরু হয়। এবার একটুুু দেরিতে শুরু হয়েছে। কারণ পানি কমতে একটু সময় নিয়েছে। ধান পাকার আগে যদি কাল বৈশাখী শুরু হয়ে যায় তাহলে সব পরিশ্রম জলে চলে যাবে। 

একই শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিলছড়ার চাষী চন্দ্র কুমার চাকমা। তিনি বলেন, ১৯৬০ সাল থেকে বাপ দাদার আমল থেকে আমরা জলে ভাসা জমিতে বোর ধান চাষাবাদ করে আসছি। শুধু ধান নয়, বিভিন্ন রকম সবজি চাষও করে থাকি। লাভও অনেক হয়। তাই প্রায় সব কৃষক এ চরের অপেক্ষায় থাকে। 

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল জানান, কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা জমির পরিমাণ নির্ভর করে হ্রদের পানি উঠানামার উপর। পানি কমতে থাকলে জমি ভেসে উঠে । এরপর চাষাবাদ শুরু হয়। এরই মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় বোরো ধান বপন শুরু হয়েছে। 

কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রাপ্ত বয়স্ক চারা বপনের পরার্মশ দেওয়া হয়েছে। যাতে ধান তারতারি আবাদ হয়। ফলনও যাতে ভাল হয় সে বিষয়েও কৃষকদের পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বেশ কিছু জমি পরিদর্শন করেছি। কাউখালী ও রাজস্থলী উপজেলা ছাড়া রাঙামাটি ১০টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলায় এ বোরো ধান চাষ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে চাষ জমির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কারণ কৃষকরা জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহী। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর