রংপুরসহ আশপাশ এলাকায় ডাল জাতীয় ফসল অড়হর সম্ভবনার আলো ছড়াচ্ছে। অড়হর চাষে খরচ একবারেই নেই বললেই চলে, উর্বর জমিরও প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র বীজের খরচটুকু দিলে জমির আইলে বাড়তি ফসল হিসেবে অড়হর চাষ করা যায়।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে চলতি বছর অড়হর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৭০ হেক্টর ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে মাত্র ৩৬ হেক্টর। এর মধ্যে রয়েছে রংপুর জেলায় ৩০ হেক্টর, গাইবান্ধায় ৫ হেক্টর ও লালমনিরহাটে ১ হেক্টর। কম খরচে এর চাষ করলে মাটিতে গাছের পাতা পড়বে, গাছও বেঁচে থাকার তাগিদে নিজের মতো করে রসদ জোগাড়ের চেষ্টা করবে। এভাবে ধীরে ধীরে অনুর্বর জমিও অন্য ফসল চাষের উপযোগী হয়ে উঠবে। ডাল জাতীয় ফসল হওয়ায় এটি মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অড়হরের মূলে বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেন সঞ্চিত হয়, যার ফলে এই জাতীয় শস্য চাষে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় তেমনই এটি ভূমিক্ষয় রোধ করতেও সক্ষম। এছাড়া গাছ কিছুটা বড় হলে তার থেকে জ্বালানিও মেলে। অড়হর গাছ ফসলের উপকারী পোকার আশ্রয় হিসেবে কাজ করে। ফলে চাষিদের লাভের পরিমাণ কিছুটা হলেও বাড়ছে।
জানা গেছে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) রংপুরের বদরগঞ্জে অবৈধভাবে দখল হওয়া ভাড়ারদহ বিল উদ্ধারসহ খনন করে বিলের পাড়ে চারদিকে ডালজাতীয় ফসল অড়হর লাগানো হয়েছে। গাছে এখন দোল খাচ্ছে করছে অড়হরের শুটি। বীজের জন্য শুটিগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, অড়হর লাগানোর ১২০ দিনের মধ্যে তা উত্তোলন করা যায়। স্বল্পমেয়াদি জাতের ক্ষেত্রে সারি ও গাছের দূরত্ব থাকবে এক ফুট, মধ্যমেয়াদি জাতে দুই ফুট এবং দীর্ঘমেয়াদি জাতে তিন ফুট/দুই ফুট দূরত্বে বীজ বোনা যায়। বিঘাপ্রতি তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল নতুন নতুন বিভিন্ন ফসলের চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধিগুণ সম্পন্ন ও সম্ভাবনাময় ডালজাতীয় ফসল অড়হর আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ইআইআরপি প্রকল্পের পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান খান বলেন, শুধু ভাড়ারদহ’ই নয়, রংপুর অঞ্চলে খননকৃত খালগুলোর পাড়ে অড়হর লাগানো হয়েছে। এতে একদিকে যেমন অড়হরের গাছের বেড়ায় খালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি শোভাবর্ধনও হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল