ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সেচে প্রতিপক্ষের বাধা, মরে যাচ্ছে বোরো চারা
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দগরবাড়ি গ্রামে বোরো আবাদে সেচের মাধ্যমে পানি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। এ কারণে মরে যাচ্ছে ১৫ একর জমিতে লাগানো বোরো ধানের চারা। দু'একদিনের মধ্যে সেচ দিতে না পারলে পুরো আবাদই নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে এই জমির বর্গাচাষিদের ২০ টি পরিবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। 

চাষিরা বলছেন, আবাদ নষ্ট হলে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হবে। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন জমির মালিকের একটি পক্ষ এবং বর্গাচাষিরা। অভিযোগ উঠেছে এ ব্যাপারে পুলিশ এবং আদালতের নির্দেশনাও মানছেন না প্রতিপক্ষ। 

অভিযোগে জানা গেছে তীরনই হাট মৌজার ১০১ খতিয়ান ভুক্ত ২৫ একর জমি প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ভোগ দখল করছেন মৃত ছালে খার ছেলে ফারুখ হোসেনসহ আরও তিন ব্যক্তি। তাদের বাড়ির পাশেই উর্বর এই জমিগুলোতে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় দরিদ্র বর্গচাষিরা। তারা অনেকে বন্ধক আবার অনেকে আধিয়ার হিসেবে চাষাবাদ করছেন।এ মাসের শুরুর দিকে চাষিরা এই জমিগুলোতে বোরো ধানের চারা রোপন করেন। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রতিপক্ষ মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে শরীফুলের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাশী ক্ষেতে এসে জমির মালিকানা দাবি করেন। তারা সেচ দেয়া বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন প্রথমপক্ষ ফারুখ হোসেন। আদালত ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন তেতুঁলিয়া থানা পুলিশকে। মামলা চলাকালীন অবস্থায় বোরো আবাদের ক্ষতি না করার নির্দেশনা দেয় পুলিশ। 

কিন্তু আদালত এবং পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জমি থেকে সেচ পাম্পটি নিয়ে যায় শফিকুল ও তার সহযোগীরা। এ সময় তারা সেচ পাম্পের বোডিং এর পাইপে ইট, পাথর ফেলে দেয়। ফলে বোডিংটি নষ্ট হয়ে যায়। এই অবস্থায় সংকটে পড়েছে বর্গাচাষিরা। তারা বলছেন, বোরো ধানের চারা পানির অভাবে মরে যেতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে প্রতিবিঘায় তাদের ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। বোরো ধান ঘরে তুলতে না পারলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভীষণ সংকটে পড়বেন। 

বর্গচাষি রঞ্জু আলম জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এক একর জমি বন্ধকী হিসেবে চাষবাদ করছেন। হঠাৎ করেই সেচ বন্ধ করে দেয়ার কারণে বোরো ধানের গাছগুলো মরে যেতে শুরু করেছে। তিনি জানান, জমির মালিকানা দ্বন্দ্ব আমরা বুঝিনা। কাগজ যার জমি তার। কিন্তু মাঝখানে আমরা বিপদে পড়েছি। এই আবাদ ঘরে তুলতে না পারলে আমাকে না খেয়ে থাকতে হবে।    তবে সেচে বাধা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রতিপক্ষ। প্রতিপক্ষ বাসেদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, তেতুলিয়া থানা পুলিশ আমাদেরকে সেচের কাজে বাধা দিতে দেয়নি। আমরা পুলিশের নির্দেশনা মেনে জমিতে যাইনি। এই অভিযোগ মিথ্যা।   এ ব্যাপারে তেতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সায়েম মিঞা বলেন, আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছি। কোনো ক্রমেই যাতে বোরো আবাদ নষ্ট না হয় সেই নির্দেশনাও দিয়েছি। রাতের অন্ধকারে সেচ পাম্প চুরির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।  

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর