ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের চরাঞ্চলে ফিরছে সুদিন
মো. কাবুল উদ্দিন খান, মানিকগঞ্জ

নদী বেষ্টিত মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বৃহদাংশ চরাঞ্চল। নদী ভাঙনের পর প্রভাবশালী কৃষকরাও হয়ে যায় ভূমিহীন নিঃস্ব। দীর্ঘ দিন তারা মানবেতর জীবনযাপন করেন। উপায়ন্তর না থাকায় বাধ্য হয়ে একাধিক ভাঙনের শিকার হয়েও আশেপাশে মাথা গুঁজে পরে থাকেন। ধীরে ধীরে নদীতে চর জেগে উঠলে আবার তারা বসবাস শুরু করেন। 

কিছুদিন আগেও চরাঞ্চলে শুধু বাদাম চাষ হতো। বেশীর ভাগ জমিই পতিত থাকতো। দিনমজুর, কৃষিকাজ, পশুপালন, মাছধরাই ছিল এ অঞ্চলের লোকজনের একমাত্র পেশা। বর্তমানে সেই দিন এদের নেই। এখন দিগন্ত চরাঞ্চল জুরে চাষাবাদ হচ্ছে গম, ভুট্টা, মাশকলাই, ধান, কলাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলসহ শাকসবজি। হাঁসমুরগী, গরু ছাগলে ভরা কৃষকের আঙিনা। সকলেই এখন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

সরেজমিনে দেখা যায় প্রতিটি কৃষক নিজের কাজে মগ্ন। কেও পশুদের দেখা শোনা করছে, কেও জমিতে কৃষিকাজ করছেন কেও বা বিভিন্ন হাটবাজারে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন। লেচড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হাতেম (৭৭) ও রহমান(৭২) বলেন, একসময় আমরা এলাকার ধর্নাঢ্য পরিবার ছিলাম। আমাদের প্রচুর ভুঁই (জমি) ছিল। আমাদেরও মানসম্মান ছিল। নদীতে ভেঙে আমরা এখন চরাঞ্চরবাসী। যারা এলাকার মায়া ছেড়ে আগেই অন্যত্র চলে গেছেন তারা মানিকগঞ্জ, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ভালো অবস্থানে আছেন। 

আক্ষেপ করে অনেকে বলেন, এই বয়সে আর সরতে চাই না। এখানেই মরতে চাই। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা বন্যা, রাস্তাঘাট না থাকার কারণে বন্যার সময় শুধু পানি আর পানি। কোথাও বের হওয়া যায় না। এ সময় গরু চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। আমরা খুব আতংকে থাকি। চরাঞ্চলবাসী মনে করেন রাস্তাঘাট নির্মাণ, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে এলাকার লোক যেখানেই গিয়ে থাকুক না কেন নাড়ির টানে এখানে ফিরে আসবে। এলাকাবাসী কৃষিকর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের প্রশংসা করে বলেন, তারা সবসময় আমাদের খোঁজ খবর রাখেন। জেলা পরিষদের সদস্য  ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী প্রতিটি দুর্যোগে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান।  

মানিকগঞ্জ কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, বর্তমানে হরিরামপুর উপজেলায় আবাদি জমির পরিমান ৬ হাজার ৪৮৮ হেক্টর। লেছড়াগঞ্জে পতিত জমির চেয়ে আবাদি জমিই বেশী। এখানে ৩ হাজার ৪১৪ হেক্টোর জমির মধ্যে ২ হাজার ২১৭ হেক্টোর জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। প্রতিবছরই পতিত অনাবাদি জমি আবাদি জমিতে পরিণত হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল 



এই পাতার আরো খবর