নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কৃষকের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ধান ক্ষেতের পোকা দমন করার পাচিং পদ্ধতি। ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ থেকে রোপা ক্ষেত রক্ষায় এ পদ্ধতি একটি কৃষি বান্ধব প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি প্রয়োগে ধানের ক্ষেতে বালাইনাশক প্রয়োজন হয় না।
পোকামাকড় দমনে মাত্রাহীন পরিমানে কীটনাশক ব্যবহারে জীব-বৈচিত্র,পরিবেশ,পশু-পাখি ও মানুষের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। কৃষকেরা কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ধান রক্ষা করতে পরিবেশবান্ধব পাচিং পদ্ধতি ব্যবহারে ঝুঁকে পড়েছে। যা কীটনাশকের ব্যবহার কমতে সাহায্য করে। এতে একদিকে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে ক্ষতিকর কীটনাশক থেকে জীব-বৈচিত্র্য পরিবেশ রক্ষা পাচ্ছে।
কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকরা বোরো ফসলের জমিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে শাখা-প্রশাখা সংযুক্ত গাছের মরা ডাল, বাঁশের কঞ্চি, আগালী, ত্রিকোণাকৃতির বাঁশের বাতা পুঁতে পাখি বসার জায়গা করেছেন। এর উপর নানা ধরণের পাখি বসে দৃষ্টি সীমার মধ্যে ক্ষতিকর পোকা ধরে খাচ্ছে। এভাবেই কীটনাশক ছাড়াই সহজেই দমন হচ্ছে পোকা। ধান উৎপাদন খরচও কমে আসছে।
উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের সরঞ্জাবাড়ি গ্রামের রানা সরকার বলেন, ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছি। ক্ষেতে মাজরা পোকা, পামড়ি পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা ও ঘাষ ফড়িংসহ কীটনাশক প্রয়োগ করলে অনেক সময় তা মরে না। ফসল উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। পাচিং পদ্ধতির ফলে পাখি ডালে বসে ধান ক্ষেতের পোকা খেয়ে ফেলছে। এ প্রযুক্তি পরিবেশবান্ধব একটি পদ্ধতি। এ পাচিংয়ের (খুটি) উপর বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে ক্ষতিকারক পোকা খেয়ে ফেলে। এর ফলে জমিতে কীটনাশক খরচ কম ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাচ্ছে। এছাড়া কৃষকরাও এ পদ্ধতি ব্যবহার করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, চলতি বছর ১১ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্র নির্ধান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের অযাচিত কীটনাশকের খরচ কমাতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহারে উৎসাহী করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে ধানের জমিতে গাছের মরা ডাল, বাঁশের কঞ্চি, আগালি,পুঁতি দিয়ে তার উপর পাখি বসার জায়গা করায় পোকার মথ, ডিম,বাচ্চা খেয়ে ফেলছে। ফলে ধান উৎপাদনে খরচ কমছে পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ রোধসহ স্প্রেকারীরাও মানবদেহের নানা রোগব্যধি থেকে রক্ষা পাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল