ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ভুট্টা চাষে সফলতার স্বপ্ন কৃষকের চোখে
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
সফলতার স্বপ্ন বুনছেন দিনাজপুরের ভুট্টা চাষিরা।

অল্প খরচে, স্বল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় ভুট্টা চাষ করে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন দিনাজপুরের ভুট্টা চাষিরা। ভুট্টার ক্ষেতে লকলকে সবুজ পাতার ফাঁকে এখন ফুল ও ভুট্টার মোচা। ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল এসব কৃষি জমিতে ভুট্টা চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। এ দেখে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ভুট্টা মানুষের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনি এটি এখন পোল্ট্রি ও মাছের খাবারসহ বিভিন্ন খাবারে যুক্ত হওয়ায় বাজারে বেড়েছে চাহিদা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর ভালো ফলন হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষকদের জীবন-জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কৃষির এই সফল বিবর্তন। আবার ভ্ট্টুা আবাদের সাথে সাথী ফসল চাষেও বাড়তি আয় হচ্ছে চাষিরা। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, সেচ, সার ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ১০-১২ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৩৫-৪০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০-৭০০ টাকা। এতে অল্প পুঁজিতে প্রতি বিঘায় ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ হয়।

খানসামা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভুট্টার চাষে অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা রয়েছে। এই মৌসুমে ৭৩২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, খানসামা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রায় সব জায়গায় কৃষকের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ এখন ভুট্টার সবুজ ক্ষেতে ভরে গেছে। ছাতিয়ানগড়, খামারপাড়া, হাসিমপুর ও ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে দেখা যায় গাছগুলো বেশ বড়ও হয়ে উঠেছে। এখন ভুট্টা ক্ষেতগুলোর পরিচর্যা ও নিড়ানী এবং সেচ কাজসহ নানা কাজে ব্যস্ত চাষিরা। গাছগুলো হাঁটু সমান আর কিছু এলাকায় আগাম ভুট্টা রোপণ করায় গাছ মানুষের উচ্চতাকে ছাড়িয়ে গেছে এবং কোথাও কোথাও গাছে মোচা এসেছে। এসব ফলন আগাম ঘরে তোলা যাবে।

হোসেনপুর গ্রামের ভূবন সেন বলেন, বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই ওঠে না। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম, দামও তেমন বেশি থাকে।

পাকেরহাট গ্রামের নিপ্পন রায় বলেন, দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম। দামও ভালো পাওয়া যায়। একটু দেরিতে বিক্রি করলে মণে ৯০০ থেকে হাজার টাকা দাম পাওয়া যায়।

খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, ভুট্টা একটি লাভজনক ফসল। তাছাড়াও কম সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে ভুট্টার ক্ষতিকর বালাই ‘ফল আর্মি ওয়ার্ম’ সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন থাকতে হবে এবং ভুট্টার পোল্ট্রি ফিড ব্যতীত এর বহুমুখী ব্যবহারে এগিয়ে আসতে হবে তাহলেই এই ফসলটির স্থায়িত্ব এবং চাষাবাদ আরও অনেকাংশে বেড়ে যাবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই    



এই পাতার আরো খবর