ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সূর্যমুখী ফুল চাষে সম্ভাবনার হাতছানি
দিনাজপুর প্রতিনিধি
সূর্যমুখী ফুল চাষে সম্ভাবনার হাতছানি।

রাস্তার ধারে কিংবা ফসলের মাঠজুড়ে হলুদের সমারোহ। অনেকে দেখে মুগ্ধ হয়ে নিচ্ছেন সেলফি। আর সূর্য যেদিকে থাকছে তাল মিলিয়ে সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে ঘুরছে। সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য দেখতে ও ছবি তুলতে দর্শনার্থীদের কাছে টানছে। অন্যদিকে সূর্যমুখী চাষে খরচ কম লাভ বেশি। এ কারণে ঝুঁকছে কৃষক। তাই এবারও রবিশষ্যের চাষাবাদে দিনাজপুরের খানসামায় নতুনমাত্রা যোগ করেছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। এ অঞ্চলের মাটির গুণাগুণ, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের উপযোগী হওয়ায় কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলেছে।

খানসামার আঙ্গারপাড়া, ভান্ডারদহ, গোবিন্দপুর, ছাতিয়ানগড়, আগ্রা, মারগাও গ্রামে ধান, ভুট্টা, গমের আবাদের সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে এই সূর্যমুখী চাষ। খানসামা উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় ৩০ জন কৃষক ৩০ বিঘা জমিতে এই ফুলের চাষ করছে।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় খানসামার ৬ ইউনিয়নের ৩০ বিঘা জমিতে ৩০ জন কৃষককে বীজ ও প্রযুক্তিসহ কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছেন।

গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, কৃষি অফিসের সহায়তায় বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে চাষ করছি। সার, সেচ ও কীটনাশক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ হবে প্রায় ৫-৬ হাজার টাকা। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে খরচ বাদে বিঘা প্রতি আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া যাবে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহেদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। প্রতি বছর ১৪ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। যে কারণে দেশে প্রচুর মুদ্রা বিদেশে চলে যায়। বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সেটি নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে এর চাষ শুরু করেছে। আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুল এখানে চাষ হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়তই প্লটগুলো পর্যবেক্ষণ করছি ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।

খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন, সূর্যমুখী একটি তেল ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো। এটি শরীরের কোলেস্টরেল ঠিক রাখে। কৃষকদের কাছ থেকে কোম্পানি সরাসরি এর বীজ কিনে নেবেন। কৃষকদের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের আন্তঃসম্পর্ক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষকরা এটি কোথায় বিক্রি করবে সেটি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ থাকবে না। আগামীতে এর চাষ আরও বাড়বে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর