ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে খেসারি কালাই চাষ, লাভের প্রত্যাশা কৃষকদের
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে খেসারি কালাই চাষ।

প্রতিবছর বন্যায় প্লাবিত হয় কুড়িগ্রামের ১৬টি নদনদীর প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চর। আবার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে চরগুলো জেগে ওঠে। কুড়িগ্রামের নদীর এসব জেগে ওঠা চর এখন কৃষকরা আর পতিত রাখছেন না। কোনো না কোনো ফসল ফলাচ্ছেন তারা। এসব জেগে ওঠা চরের জমিতে খেসারি কালাই (ডাল) চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

মাত্র সাড়ে ৪ মাস এসব চরের জমিতে পরিচর্যা করে এখন লাভের আশায় বুক বেঁধে আছেন এখানকার কৃষকরা। আসছে রমজান মাসের রোজার আগেই এ খেসারি কালাই ঘরে তুলতে পেরে বেজায় খুশি তারা। খেসারি ডালের তৈরি পিয়াজু অত্যন্ত সুস্বাদু, যা রোজাদারদের একমাত্র মুখরোচক খাবার। রোজায় ইফতারিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পিয়াজু বানাতে এই খেসারি কালাইয়ের অত্যন্ত কদর রয়েছে। রমজানের রোজাকে ঘিরে একটু দাম বেশি পাওয়ার প্রত্যাশা কৃষকদের। তারা এসময়টাতে বেশি দামে বিক্রি করে দুটো বাড়তি পয়সা আয় করতে পারবেন বলে বেশ খুশি চাষিরা।

কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর কুড়িগ্রাম জেলায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে খেসারি কালাইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ১৬১ হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। চরাঞ্চলে অধিক পরিমাণে এই ডাল চাষ করা হয়ে থাকে। এবার সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নে ব্যতিক্রমভাবে দেড় শতাধিক চাষি যৌথভাবে ২৫ একর জমিতে এই কালাই চাষ করেছেন। খরচ কম হওয়ায় অল্প খরচে অধিক কালাই পেয়ে চাষিদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, আমার ইউনিয়নে ব্রহ্মপূত্র নদের জেগে ওঠা চরের ২৫টির অর্ধেক চরে মানুষ বসবাস করলেও নতুন জেগে ওঠা চর স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত সেই চরে মানুষ বসতি স্থাপন করে না।  ভগবতীপুর ও পোড়ার চরের মাঝখানে প্রায় ৮০ একর জমি নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন একটি চর। এই চরের অধিকাংশ জমিতে চাষ করা হচ্ছে খেসারি ডালসহ বিভিন্ন ফসল। পালন করা হচ্ছে গবাদি পশুও। কেউ কেউ এখানে নতুনভাবে বসতি গড়ে তুলছেন। এই বিশাল চরের মধ্যে প্রায় ২৫ একর জমিতে পাশের চর যাত্রাপুর গ্রামের ১৫০টি পরিবার নতুন এই চরে যৌথভাবে চাষ করেছেন খেসারি কালাই।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেদুল হাসান জানান, চরের পতিত জমিতে খেসারি ডাল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বড় বিষয় এ চরের কৃষকরা যেভাবে নিজেরা যৌথভাবে ডালসহ অন্যান্য ফসল ফলাচ্ছেন, এভাবে সকল চরে খেসারি চাষের বিষয়ে কৃষি বিভাগকে সাথে নিয়ে তাদের উন্নয়নে সে সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও আসন্ন রমজানে কৃষকরা এ ডাল বিক্রি করে লাভবান হবেন বলে মনে করি।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর