ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২২ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রির সম্ভাবনা
মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ বছর কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও কৃষকেরা সঠিকভাবে বাগানের পরিচর্যা করায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে ভাল দাম পেয়ে খুশি বাগান মালিকরা। অন্যদিকে দাম হাতের নাগালে থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। চলতি বছর জেলায় প্রায় ২২ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ করা হয়েছে। জেলার বিজয়নগর, কসবা এবং আখাউড়া উপজেলার পাহাড়ি টিলা এলাকার মাটি লাল হওয়ায় সেখানে কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে। জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর, কালাছড়া, ছতুরপুর, পাহাড়পুর, মেরাসানী, আউলিয়া বাজার, চম্পকনগর, সিঙ্গারবিল, কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর, বায়েক, মন্দভাগ, কায়েমপুর এবং আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, আমোদাবাদ, রাজাপুর এলাকায় রয়েছে কাঁঠাল বাগান। এসব বাগানে গাছে গাছে ঝুলে আছে ছোট-বড় রসালো কাঁঠাল।

কৃষকরা জানান, পাহাড়ি টিলার কাঁঠাল রসালো ও মিষ্টি হওয়ায় বাজারে এসব কাঁঠালের রয়েছে বেশ চাহিদা রয়েছে। প্রতি একশো কাঁঠাল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা দরে বাগান থেকে বিক্রি হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন বাগান মালিকেরা।

বিজয়নগরের বাগান মালিক আবুল হাসান বলেন, চলতি বছর আমাদের এলাকায় কাঁঠালের ভালো হয়েছে। প্রতিদিনই বাগান থেকে ১ থেকে ২ শ কাঁঠাল কাটা হয়।  প্রতি একশ কাঁঠাল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা কাঁঠাল নিতে আমাদের এলাকায় আসেন। এখান থেকে কাঁঠাল নিয়ে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। ফলন ভালো হওয়ার আমরা লাভবান হবো বলে আশা করছি।

মো. ফারুক নামে এক কাঁঠাল বিক্রেতা বলেন, আমরা প্রতি একশো কাঁঠাল ৬ হাজার টাকা দরে আগেই বাগান কিনে রেখেছিলাম।  বর্তমানে প্রতি একশ কাঁঠাল ৮/৯ হাজার টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছি। ব্যবসা ভালো হবে ইনশাল্লাহ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দ বাজারের কাঁঠাল বিক্রেতা আবদুল হাকিম বলেন, আমি বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর, কালাছড়া, ছতুরপুর, পাহাড়পুর, মেরাসানী, আউলিয়া বাজার এলাকা থেকে কাঁঠাল কিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনে বিক্রি করি। প্রতিদিন প্রায় তিনশত কাঁঠাল বিক্রি  করতে পারি। বিজয়নগরের কাঁঠাল অন্যান্য এলাকার কাঁঠালের চেয়ে দেখতে সুন্দর, সাইজে ভালো ও সুস্বাদু। 

আনন্দ বাজারে কাঁঠাল কিনতে আসা যুবক হিমেল বলেন, অন্যান্য এলাকার চেয়ে বিজয়নগরের কাঁঠাল আমাদের কাছে প্রিয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, চলতি বছর জেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ করা হয়েছে। জেলার বিজয়নগর, কসবা এবং আখাউড়া উপজেলায় কাঁঠালের আবাদ ভালো হয়। চলতি বছর কাঁঠালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ হাজার ২৬০ মেট্রিন টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও ফলন ভাল হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, জেলায় প্রায় ২২ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর