ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সৌদির খেজুর চাষ ও চারা বিক্রি: স্বাবলম্বী সেই সোলায়মান
শরীয়তপুর প্রতিনিধি

অনলাইনে ভিডিও দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সৌদি খুরমা খেজুরের বাগান ও চারা বিক্রি করে স্বাবলম্বী শরীয়তপুরের সোলায়মান খান। তিন বছরের ব্যবধানে এখন তার বার্ষিক আয় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। নিবিড় পরিচর্যায় খুরমা খেজুর  ও চারা উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন সোলায়মান ও তার পরিবার।

খুরমা খেজুর চাষি ও উদ্যোক্তা সোলাইমান জানান, নিজের ও পরিবারের ভাগ্য ফেরাতে অনলাইনে ভিডিও দেখে বিভিন্ন খেজুর বাগান পরিদর্শন করে ২০১৯ সালের মে মাসে বন্ধুদের মাধ্যমে প্রথমে সৌদি আরব থেকে বীজ আনেন। পরে রংপুর, গাজীপুর, নরসিংদী থেকেও সৌদি খেঁজুরের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পশ্চিম পাশের কাঠ বাগান কেটে চার লাখ টাকা খরচ করে ২ বিঘা জমিতে ১০০ খেজুর চারা রোপণ করেন। নিজের মতো করে গাছের পরিচর্যা করতে থাকেন। পরে গাছের যত্ন নিয়ে বাগান করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি নার্সারিও করেছেন। নার্সারিতে বিভিন্ন দামে খেজুর চারা বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে তার কয়েক হাজার খেজুর গাছ ও চারা আছে। সারা দেশে খুরমা খেজুরের চারা ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। দেশেই খেজুর উৎপাদন করে আমদানি নির্ভর থেকে বেরিয়ে আসাসহ সরকারের সহযোগিতা চাইলেন সোলায়মান খান। 

তিনি মনে করেন, মানুষের ইচ্ছা ও পরিশ্রমই তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে। সে উদ্যম নিয়েই তিনি নিরলসভাবে পরিশ্রম করছেন এ বাগানে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে সারি বাঁধা শত শত খুরমা খেজুরের চারা। পাশেই মাটি ভর্তি পলিথিনের ব্যাগ, তৈরি হচ্ছে নতুন চারা। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ছোটকাচনা গ্রামে তার খেজুর বাগানে সার্বক্ষণিক পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত আছেন সোলায়মান। তিন বছরের ব্যবধানে কয়েকটি গাছে এসেছে খেজুর। খেজুরের পুরো রং না আসলেও আধা পাকা খেজুর খেতে দারুণ স্বাদ। সোলায়মানের এ উদ্যোগ ও সাফল্য দেখে অনেকেই এখন বাগান করেছেন ও বাগান করার কথাও ভাবছেন। অনেকেই প্রতিদিন খেজুর বাগান দেখতে আসেন।

শাহআলম মিয়া, কাঞ্চন চৌধুরীসহ অনেকে বলেন, সৌদি থেকে খেজুরের চারা এনে চাষ করে তিন বছরেই সফল হয়েছেন সোলায়মা0ন। তার গাছে খেজুরও ধরেছে। কাঁচা খেজুরগুলো খেতে অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। তার থেকে চারা নিয়ে আমরাও খুরমা খেজুর চাষ করে সফল হতে চাই। 

সোলায়মানের বাবা দলিল উদ্দিন খান বলেন, ছেলেকে খুরমা খেজুর বাগান করার জন্য ছেলেকে জমি দিছি। এখন সাফল্য এসেছে ছেলের। খেজুর ও চারা বিক্রি করে ছেলের বার্ষিক আয় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। আজও আটটি বড় খেজুর গাছ বিক্রি করেছি দেড় লাখ টাকা।

নাগেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল খান বলেন, সৌদির খুরমা খেজুর চাষ করে লাভবান সোলায়মান। তার খেজুর গাছে খেজুর ধরেছে। খেজুরগুলো মিষ্টি ও অনেক সুস্বাদু। তারমত এমন উদ্যোগী হয়ে খেজুর গাছ লাগিয়ে বাংলাদেশের খেজুরের চাহিদা পূরণে সকলকে উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। এমন উদ্যোক্তাদের পাশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে সফলতা আসবেই বললেন চেয়ারম্যান।

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর