ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বক দিয়ে বক শিকারের ফাঁদ!
বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি

শুরু হয়েছে শীত মৌসুম। আমনের মাঠে মাঠে ধানের মঞ্জুরি। প্রতি বছর এ সময়টাতেই, সিলেটের বিশ্বনাথে বক শিকারে মরিয়া হয়ে ওঠে এক শ্রেণির অসাধু পাখি শিকারিরা। ধানি জমির আইলে আইলে পাতা হয় বিশেষ ধরনের ফাঁদ। তারা বক শিকারে ব্যবহার করেন পোষা বক। বাঁশের ফালি ব্যবহার করে তৈরি করা হয় গোলাকার লম্বা ছাউনি। বেত, সুপারি ও কলাপাতায় মোড়ানো হয় এটি। তার পাশেই সুরু খুঁটিতে রাখা হয় শিকারি বক। ছাউনির ভেতর লুকিয়ে থেকে তারা পোষা বকটি নাড়েন অনবরত। এই বকের ডানা ঝাপটানো দেখে আশপাশ থেকে ছাউনির উপর বসে বকের ঝাঁক। আর সাথে সাথেই সেগুলো ধরে খাঁচাবন্দী করেন শিকারিরা। সন্ধ্যায় স্থানীয় বিভিন্ন হাটে ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হয় একেক জোড়া বক। পাখি শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি করা হলেও এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে।

সম্প্রতি উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকায় দেখা পাওয়া যায় এক বক শিকারির। এসময় ১০টি বক শিকার করে ফিরছিলেন তিনি। তার সাথে কথা হলে জানান, তার নাম মনসুর (৩০)। বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায়। প্রতি বছর শীত মৌসুমে একই কায়দায় বক শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। প্রতিদিন ৩০-৪০টা বক শিকার করে বিক্রি করেন মনসুর।

মনসুরের মতো আরও একাধিক শিকারি বিশ্বনাথের বিভিন্ন এলাকায় বক শিকার করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। বন্যপ্রাণী আইনে পাখি শিকার দণ্ডনীয়-এ তথ্য মনসুর জানেন না বলে দাবি করেছেন।

প্রকৃতি বিশেষজ্ঞরা বলেন, এভাবে নির্বিচারে পাখি নিধন করলে, অদূর ভবিষ্যতে এর বিরূপ প্রভাব আমাদের বহন করতে হবে। প্রকৃতির বন্ধু পাখিদের নিধন নয়, সংরক্ষণ করতে হবে। অবাধ বিচরণের পথ সুগম করে দিয়ে, অসাধু শিকারীদের আইনানুযায়ী দণ্ডের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান সরকার বলেন, পাখি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে কথা হলে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী বিভাগ) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গণসচেতনতা তৈরি করতে ইতিমধ্যে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। অতিথি পাথিসহ সকল ধরনের পাখি সংরক্ষণে বাজারে বাজারে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হবে। সেই সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে শিকারীদের বিরুদ্ধেও।    

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা



এই পাতার আরো খবর