ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

ফুলবাড়ীতে কমলা চাষে সফলতা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
ফুলবাড়ীতে কমলা চাষে সফল কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে প্রথমবারের মতো ভারতের দার্জিলিং ও ভুটানের সাদকি জাতের কমলা চাষ করা হয়েছে। এবছর প্রথম বাণিজ্যিকভাবে এ প্রজাতির কমলা চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উপজেলার কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক। কমলা চাষে ব্যাপক সফলতা লাভ করেছে বলে জানা গেছে। তার এমন সাফল্য দেখে এখন কমলা চাষ করার জন্য এলাকার অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

কমলার চাষ করে তিনি কিভাবে সফলতা লাভ করেন, তা জানতে কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিকের কাছে গিয়েও পরামর্শ নিচ্ছেন অনেকেই। তাছাড়া তাকে অনুসরণ করে অনেকেই কমলার চাষাবাদও শুরু করেছেন। কমলা চাষে ব্যাপকতায় কমলার গ্রাম হিসাবে এরই মধ্যে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের সুজনেরকুটি গ্রামটি নতুনভাবে পরিচিতি লাভ করেছে।

এখন আবু বক্করের কমলার বাগানে থোকায় থোকায় কমলা দেখে অনেকেই মুগ্ধ হচ্ছেন। এত সুন্দর বাগান করায় কৃষক আবু বক্কর এখন এলাকায় প্রশংসায়ও ভাসছেন এবং মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বর্তমানে তার বাগানে বিভিন্ন আকৃতির কমলা দেখা যাচ্ছে।

সরেজমিন জানা যায়, ফুলবাড়ী উপজেলার আবু বক্করের বাগানের প্রতিটি গাছে গাছে কাঁচা সবুজ ও হলুদ রঙের কমলা ঝুলে আছে। ভারতের দার্জিলিংয়ের সাদকি জাতের এই কমলা মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও এর ব্যাপক চাহিদা দেখা যায়। ওই এলাকায় কমলা চাষের সূচনা করেন সদ্য কমলা চাষে সফলতা অর্জনকারী কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি ৪ বছর আগে যশোর জেলার মহেশ গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানেই স্থানীয় আশরাফুল আলমের নার্সারি ও তার কমলার বাগান দেখে মুগ্ধ হন তিনি। সেখানে দেখে সিদ্ধান্ত নেন কমলা চাষ করার। এরপর নার্সারির মালিক ও কমলা চাষি আশরাফুল আলমের সঙ্গে কমলা চাষ করার পরামর্শ নেন।

পরে তিনি ওই নার্সারি থেকে সাদকি জাতের ২১০টি চারা এনে ৩০ শতক জমিতে ১০ ফুট দূরত্বে রোপণ করেন। অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৩৫টি গাছ রক্ষা করেন তিনি। প্রতিটি গাছে গাছে কমপক্ষে ৭০ থেকে ১০০টিরও অধিক কমলা ধরেছে। এই কমলা চাষ কৃষকের জন্য সহজলভ্য। সামান্য রাসায়নিক সারের সাথে প্রচুর পরিমাণে জৈব সার প্রয়োগ করায় ২৮ মাস পর কমলায় ফল আসা শুরু হয়। প্রত্যেকটি গাছে ৮০ থেকে ৯০ কেজি কমলা ধরেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কমলা বাগানের মালিক কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এমন সুস্বাদু কমলা বিদেশে রফতানি করা যাবে। বর্তমান বাগানে যে কমলা আছে, তা বিক্রি করলে যাবতীয় খরচ মিটিয়ে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করবেন বলে তিনি আশা করেন।

ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, এই উপজেলার মাটি লেবু জাতীয় ফল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবার প্রথম বাণিজ্যিকভাবে কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক কমলার চাষ করে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কমলার চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর