ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চড়ুই পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত জংশন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া
কৃষ্ণচূড়া গাছে রাত হলেই ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি আশ্রয় নেয়

বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার জংশন স্টেশনে আর পৌর শহরের বটতলী এলাকায় কৃষ্ণচূড়া ও বটগাছগুলোই এখন পাখিদের নিরাপদ আবাস। প্রতিদিন সন্ধ্যা আর ভোরে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক হাজার চড়ুই পাখিতে ভরে যায় গাছগুলো। এক গাছেই কয়েক হাজার পাখি আশ্রয় নিয়ে থাকে বলে পাখিদের কোলাহলে ভরে থাকে এলাকাটি। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ পাখিদের এই কোলাহল দেখতে আসেন।

ব্যস্ত জংশনে ট্রেনের শব্দ আর যাত্রীদের ছোটাছুটি। দিনভর স্টেশনের কুলি, দোকানি ও আশপাশের যানবাহনের চালকদেরও থাকে চরম ব্যস্ততা। কাজ শেষে ক্লান্ত এসব মানুষের ঘরে ফেরার ব্যস্ততা। ঠিক তখনই এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি শুরু করে চড়ুই পাখির ঝাঁক। শত ব্যস্ততার মাঝেও চড়ুইগুলোর এমন দুষ্টুমির দৃশ্য এক পলক দেখার লোভ সামলাতে পারেন না পথচারীরা। এতেই প্রশান্তি আসে ক্লান্ত মানুষগুলোর মনে।

আদমদীঘির সান্তাহার জংশন স্টেশন আর পৌর শহরের বটতলী এলাকায় কৃষ্ণচূড়া ও বটগাছগুলোর ডাল-পাতার ফাঁকে ফাঁকে শুধু পাখি আর পাখি। সন্ধ্যা নামলেই ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি আশ্রয় নেয় গাছগুলোতে। কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। পাখিদের এমন দুষ্টুমিতে একটুও অতিষ্ঠ হন না গাছগুলোর নিচের দোকানিরা এবং জংশনের প্ল্যাটফরমে অপেক্ষমাণ ট্রেন যাত্রীরা। উল্টো কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখেন তারা।

দিনের আলো একটু একটু করে কমছে, পাল্লা দিয়ে পাখিদের সংখ্যা বাড়ছে। আশপাশের বিদ্যুতের তার, আর গাছগাছালি পাখিতে ভরে যায়। শুরু হয় এদিক-ওদিক ওড়াউড়ি। এভাবে কিছুক্ষণ ছোটাছুটির পর গাছের ডালে ও পাতায় বসে আবারও হই-হুল্লোড় আর চেঁচামেচি করে নিজের জায়গা করে নেয় পাখিগুলো।

সান্তাহার স্টেশন রোড এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন রনি জানান, হঠাৎ করেই কিছু পাখি এখানে আশ্রয় নিতে শুরু করে। লোকজন তাদের বিরক্ত না করায়, কিছুদিনের মধ্যে ওদের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এখন কত মানুষ যে পাখিগুলো দেখতে এখানে আসে, তা বলতে পারব না। ঝাঁক বেঁধে পাখিদের ওড়াউড়ির দৃশ্য আর কিচিরমিচির শব্দে মন ভরে যায়। ট্রেন যাত্রীদের পাশাপশি বহু মানুষ এসব চড়ুই পাখির ছবি তুলতে প্রায় প্রতিদিনই আসছেন স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে।

এদিকে জংশন থেকে প্রায় ৫০ মিটার পশ্চিমে সান্তাহার পৌর শহরের ঘোড়াঘাট এলাকার বটগাছে অসংখ্য পাখি আশ্রয় নিয়েছে। সেখানকার ব্যবসায়ী রাসেল পারভেজ ডল জানান, প্রতিবছর আগস্টের শুরুর দিকে চড়ুই পাখিগুলো এখানে আশ্রয় নেয়। ৪-৫ মাস থাকার পর আবার চলে যায়।

পৌর শহরের স্কুলশিক্ষক লেমন মাহবুব জানান, পাখির দুষ্টুমি আর কিচিরমিচির তাকে আকৃষ্ট করে। তিনি সঙ্গে করে ছেলে আব্দুর রহমান হুমায়রিকে নিয়ে আসেন। শহরের চিৎকার-চেঁচামেচি আর যানবাহনের শব্দের মাঝেও গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে পাখি দেখে তিনি মুগ্ধ। শত ব্যস্ততা থাকলেও পথচারীরা পাখিদের কোলাহল দেখে একটু হলেও থমকে দাঁড়ান।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর