ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত মাঠ, বেড়েছে চাষ
বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

নওগাঁয় ক্রমাগত সরিষা চাষের পরিমান বাড়ছে। আমন ধান কেটে কেউ আলু আবার কেউ সরিষা রোপণ করেছেন। মাঝখানে সরিষা চাষে একেবারেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন চাষিরা। ভালো দাম পাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে তারা পুনরায় সরিষা চাষে বেশি মনোনিবেশ করছেন। গত ৫ বছরে জেলায় সরিষা চাষের পরিমান বেড়েছে ১৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে রবি মৌসুমে জেলায় মোট ৪৩ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ২৯ হাজার ২৬৫ হেক্টর, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ৩১ হাজার ১৭৫ হেক্টর, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩১ হাজার ৩২০ হেক্টর এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৩৪ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। অর্থাৎ গত ৫ বছরে জেলায় সরিষা চাষের পরিমান বেড়েছে ১৪ হাজার ৪৩০ হেক্টর। 

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছর উপজেলা ভিত্তিক সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রার পরিমান সদর উপজেলায় ২৩১০ হেক্টর, রানীনগরে ৩৫৯০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৩১২৫ হেক্টর, বদলগাছীতে ১২৫০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ২৩০৮ হেক্টর, পতœীতলায় ৬৪৫০ হেক্টর, ধামইরহাটে ৩২৩৫ হেক্টর, সাপাহারে ৪৫১০ হেক্টর, পোরশায় ৪৪৭০ হেক্টর, মান্দায় ৬৩০০ হেক্টর এবং নিয়ামতপুরে ৬৭৫ হেক্টর। এ পরিমাণ জমি থেকে ৬৭ হাজার ৪০৫ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হবে। বর্তমানে কৃষকরা উন্নত জাতের বারী-১৪, বারী-১৫, বারী-১৭, বারী-১৮, বিনা-৪, বিনা-৭, বিনা-৯ এবং টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ করছেন। কৃষি বিভাগ থেকে প্রনোদনা ও সরিষা তেলের দাম বেশি হওয়ায় চলতি বছরে কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে।

মান্দা উপজেলার বালিচ গ্রামের কৃষক বকুল হোসেন বলেন, এ বছর দুই বিঘা জমিতে টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি ৬-৭ মণ ফলন পাওয়া যায়। গত বছর ৩ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা মণ দাম পাওয়া গেছে। গত কয়েক বছর থেকেই ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। সরিষা উঠানোর পর ওই জমিতে বোরো আবাদ করা হবে। 

উপজেলার ভারশোঁ গ্রামের সরিষা চাষি হারুন বলেন, বিঘা প্রতি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। সরিষা ঘরে উঠানো পর্যন্ত খরচ হয় প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এ বছর ৬ বিঘায় টরি-৭ জাতের সরিষা লাগিয়েছি। গত বছর ভালো দাম পাওয়া গেছে। আশা করছি এ বছরও ভালো দাম পাওয়া যাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, বর্তমানে সরকার সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে প্রণোদনাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। বাজারে সরিষার ভালো দাম পাওয়া, নতুন নতুন উন্নত জাতের উদ্ভাবনের ফলে ফলন বৃদ্ধি এবং পতিত জমিতে মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে সরিষা চাষের মাধ্যমে লাভজনক হওয়ার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরিষা উত্তোলন করেই তারা ওই জমিতে বোরো চাষ করতে পারছেন। এতে খরচ কিছুটা কম হয়।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর