কয়েকদিন থেকে  রংপুরসহ আশপাশ এলাকায় প্রচন্ড ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর হাড় কাঁপানো শীতে মানুষের পাশাপাশি প্রাণিরা কাবু হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড ঠান্ডায় ক্যালসিয়াম সংকটে জ্বর, শর্দি, খাবার অরুচিসহ নানা রোগে ভুগছে এ অঞ্চলের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন প্রাণি। তবে প্রাণি সম্পদ বিভাগ বলছে এখন পর্যন্ত শীতের কারণে কোনো প্রাণির মৃত্যু ঘটেনি। শীত কমলে রোগবালাই আরো বাড়তে পারে। 

  জানুয়ারির প্রথম থেকে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে প্রথম শৈত্য প্রবাহ। ফলে মানুষের পাশাপাশি প্রণিকুলেও দেখা দিয়েছে চরম সংকট। শীতের কারণে হাঁস-মুরগির খাদ্য গ্রহণের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে ডিম উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে । অপরদিকে সংকটে পড়েছে গবাদী পশুগুলো। প্রয়োজনীয় উত্তাপ না পাওয়ায় পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করতে পারছে অনেক গরু- ছাগল। ফলে খামারগুলোতে দুগ্ধ উৎপাদন হৃাসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শীত জনিত রোগে ভুগছে গবাদি পশুগুলো। অনেকে গবাদি পশুর গায়ে মানুষের মত গরম কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখছেন। সূত্র মতে শীতে গামবোরো জাতীয় রোগে প্রচুর পরিমাণে ব্রয়লার, কক, সোনালি ও লেয়ার মুরগি মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া গরু-মহিষের গলাফুলা রোগে প্রাণহানি ঘটতে পারে। এই রোগকে স্থান বিশেষে গলাফুলা, ব্যাংগা, ঘটু, গলগটু, গলবেরা রোগ বলা হয়।  এছাড়া শীতে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার ক্ষুরারোগের আশঙ্কা রয়েছে। শীতের কারণে গরুর বাদলা, ফ্যাসিওলিয়াসিস, তড়কাসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। 

রংপুর নগরীর খাসবাগ এলাকার আসাদুজ্জামান জানান, শীতের কারণে তার এলাকায় গরুর খাবার রুচি কমে গেছে এবং জ্বর জ্বর ভাব দেখা দেয়ায় তিনি চিকিৎসকের পরামর্শমত ওষুধ খাওয়াচ্ছেন।  

রংপুর প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্র মতে প্রতিটি জেলায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ গবাদি প্রাণি রয়েছে। সেই হিসেবে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় গরু, ছাগল, হাঁস,মুরগিসহ বিভিন্ন প্রণি রয়েছে প্রায় ৬ কোটির বেশি। অব্যাহত শীতে এসব প্রাণির অবস্থা কাহিল হয়ে পছে। নানা রোগ বালাইয়ের কারণে এদের প্রজণন ক্ষমতাও হৃাস পাচ্ছে।  

রংপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে এখন পর্যন্ত কোন প্রাণির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে শীতোত্তর প্রাণিদের বিভিন্ন রোগ বালাই হতে পারে। সে লক্ষে মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা কাজ করছে। 

রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানান, শুক্রবার এই অঞ্চলে সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ থেকে ১০  ডিগ্রী সেলসিয়াস উঠানামা করছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল