আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম উৎপাদনের জন্য এবার অনইয়ার হওয়ায় গাছে গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে।
কিন্ত এখনও প্রতি আমগাছে মুকুল না আসায় আম চাষীরা হতাশায় ভুগলেও আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূল থাকায় হতাশ হবার কোনও কারণ নেই। কারণ আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য গাছে দেরিতে মুকুল আসছে। তাই আমগাছে মার্চ মাস পর্যন্ত মুকুল আসবে।
জানা গেছে, এবার অনইয়ার হওয়ায় জেলায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবছর অফইয়ার হওয়ায় আমের আশানুরুপ ফলন হয়েছিল। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় এক বছর আমের উৎপাদন ভালো হলে পরের বছর খারাপ হয়। কিন্তু এবারও আমের উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করছেন আমচাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র মতে, জেলার ৫ উপজেলায় এবার ৩৭ হাজার ৫৮৮ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৬৫০ টি আম গাছ রয়েছে। এর মধ্যে শিবগঞ্জে ২০ হাজার ২৬০ হেক্টর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ৪ হাজার ২৩০ হেক্টর, নাচোলে ৪ হাজার ২৭১ হেক্টর এবং ভোলাহাট উপজেলায় ৩ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য আমের জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত বা হিমসাগর, বোম্বাই, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, লক্ষণভোগ, মল্লিকা, ফজলি, আ¤্রপালি, গৌড়মতিসহ অন্যান্য জাতের গুটি আম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমগাছে মুকুল আসার সময়কাল ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে এখন পর্যন্ত ৭০ ভাগ গাছ মুকুলিত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে শতভাগ গাছ মুকুলিত হবে এবং এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদনও ভালো হবে। গতবার অফ ইয়ার হওয়ায় কিছুটা কম উৎপাদন হয়েছিল কিন্তু এবার অনইয়ার হওয়ায় ভালো উৎপাদন হবে।
এদিকে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোখলেসুর রহমান আম চাষিদের উদ্দেশ্যে বলেন, যেসব গাছে ৪ ইঞ্চি থেকে ৬ ইঞ্চি সাইজের মুকুল বেরিয়েছে অথচ ফুল ফুটেনি সেইসব গাছে ১টি কীটনাশকের সঙ্গে ১টি ছত্রাকনাশক স্প্রে করা যেতে পারে। এরপর গুটি যখন মটরদানার সমান হবে তখন আরেকটি স্প্রে করা যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবতলা এলাকার আমচাষী সুকুমার প্রামানিক জানান, আমের ভালো ফলন হবার জন্য তিনি এখন বাগান পরিচর্যার কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। তুলনামূলকভাবে এবার বড় আমগাছের চেয়ে ছোট আমগাছে বেশি মুকুল আসছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ