ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মধু আহরণে প্রথম ধাপে দল বেঁধে সুন্দরবনে ৪০০ মৌয়াল
শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মধু আহরণ মৌসুম। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই মধু আহরণ মৌসুম চলবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত। মৌসুমের শুরুতে প্রথম দুই দিনে (২ এপ্রিল) বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ থেকে পাশ-পারমিট নিয়ে ৫২টি নৌকায় করে দল বেঁধে ৪০০ জন মধু আহরনকারী মৌয়াল ম্যানগ্রোভ বনে প্রবেশ করেছে। অন্য মৌয়ালরা এখন সুন্দরবনে যেতে নৌকা মেরামত ও প্রয়োজনীয় উপকরন গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি আহরণ মৌসুমে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা সুন্দরবন বিভাগের।   

সুন্দরবন বিভাগ ও মৌয়ালরা বলছেন, এপ্রিলের শুরুতেই সুন্দরবনে গড়াইন ও খলিশা গাছের ফুলের মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। গড়াইন ও খলিশা ফুলের মধু ছাড়াও জুন পর্যন্ত ৩ মাস ধরে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) সুন্দরবনের বিভিন্ন গাছের ফুলের মধু মৌচাক থেকে পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করবেন মৌয়ালরা। এ সময়ে মহাজনদের কাছ থেকে আগাম টাকা (দাদন) নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে যান মৌয়ালরা। এক-একটি নৌকার মৌয়ালরা বন বিভাগ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব পরিশোধ করে ৪৫ দিনের পাশ পারমিট নিয়ে জন্য সুন্দরবনে অবস্থান করবেন। এসময়ে গাছে ঝুলে থাকা মৌচাক থেকে মৌয়ালরা সংগ্রহ করবেন কাঙ্খিত মধু। মৌয়ালরা জানান, তারা বড় এক-একটি মৌচাক থেকে ১৫ থেকে ২০ কেজির অধিক মধু পেয়ে থাকেন। 

শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জান (আসাদ) জানান, চলতি মৌসুমে শরণখোলা রেঞ্জ থেকে তিন মাসে মধু আহরণের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ কুইন্টাল ও মোম ১৫০ কুইন্টাল। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ১ এপ্রিল মধু আহরণ মৌসুমের প্রধম দিন থেকে রেঞ্জের অফিসগুলো পাস-পারমিট দেয়া শুরু হয়েছে। রবিবার (২ এপ্রিল) বিকাল পর্যন্ত এই রেঞ্জ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে পাশ-পারমিট নিয়ে ৩১টি নৌকায় করে ২৪৭ জন মৌয়াল সুন্দরবনে গেছেন। 

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দুটি রেঞ্জ শরণখোলা ও চাঁদপাই থেকে মধু আহরণ মৌসুমের শুরুতে প্রধম দুই দিনে পাশ-পারমিট নিয়ে ৫২টি নৌকায় করে দল বেঁধে ৪০০ জন মৌয়াল সুন্দরবনে গেছেন। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে এ বছর মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৮০০ কুইন্টাল। আর মৌচাক থেকে মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৮৮ কুইন্টাল। গত মধু আহরণ মৌসুমে সুন্দরবনের এই পূর্ব বিভাগ থেকে মধু আহরিত হয়েছিল ২৫০ কুইন্টাল ও মোম আহরিত হয়েছিল ২০৬ কুইন্টাল। চলতি আহরণ মৌসুমে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের এই শীর্ষ কর্মকর্তার।   

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর