ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

শার্শার বেতনা নদীতে সেচ দিয়ে ধান চাষ
বেনাপোল প্রতিনিধি

নদীর নাম বেত্রাবতী হলেও  শার্শাবাসীর কাছে বেতনা নামে পরিচিত। এক সময় খরাস্রোত বেতনা নদী এখন মৃত। নদীর বহমানতাকে আটকে বছরের পর বছর মাছ চাষের ফলে তলদেশ শুকিয়ে এখন খা খা করছে। জেলেদের পরিবর্তে পানি শূন্য নদীতে নেমেছেন চাষিরা। সেচ দিয়ে নদীতে  ধান চাষ করেছেন এলাকার মানুষ। যেখানে একদা রূপালী ঢেউ আছড়ে পড়তো সেখানে এখন বাতাসে দুলছে সোনালী ধান। এ ধান নিয়েই স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। মৃতপ্রায় এই নদীর একটি বিরাট অংশ জুড়ে আবাদ হয়েছে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান। আবাদকৃত সেই আধা-পাকা সোনালি ধান বর্তমানে বাতাসে দোল খাচ্ছে।

শার্শা উপজেলার সীমানায় বেতনা নদীর একটি বিশাল অংশ জুড়ে আবাদ হয়েছে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান। কোথাও যতদূর দু’চোখ যায় শুধু ধান আর ধান।দেখে বুঝার উপায় নেই যে এটি কোন নদী। এই নদী অংশের শত শত বিঘা জমিতে বর্তমানে বাতাসে দোল খাচ্ছে আধা-পাকা ধান।

কয়েক দশক পূর্বে নদীটি ছিল খরা স্রোত। প্রতিদিন দুইবার করে তার বুকে জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হতো। এ নদীকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বড় বড় বাজার স্থাপিত হয়েছে। এ নদীর সাথে  সংযোগ করে উলশী যদুনাথপুর প্রকল্পের নামে দেশে প্রথম সেচ প্রকল্প চালু হয়। এ নদীর পানি দিয়েই একাধিক সেচ প্রকল্প চালু ছিল। শুষ্ক মৌসুমে এ নদীর পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যেত। ফলে  শংকরপুর এলাকায় জলঅবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। ২০ বছর আগেও নদীটিতে ট্রলারসহ ছোট ছোট জলযান চলাচল করতো। এসব এখন স্মৃতি। যে নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার হতো সেই নদীর বুকে শুরু হয়েছে সেচ কাজ। নিজামপুর ইউনিয়নের গোড়পাড়া উত্তরপাড়া গ্রামের আসানুর, ডিহির নৈহাটি গ্রামের জিয়া, ডিহির দিপন, লক্ষণপুরের সালতা শেখপাড়ার সামাদ ও আহাদ, শুড়ারঘোপ গাজীপাড়া গ্রামের বাক্কু, হযরত ও ইসমাইলসহ অনেক চাষির সাথে।

তারা বলেন, বেতনা নদী পলি জমে প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। অধিকাংশের মাঠে নিজস্ব তেমন আবাদি জমি না থাকায় বছরের বোরো সিজনে শুষ্ক থাকায় বাড়ির নিকট বেতনা পরিষ্কার করে ধান চাষ করেছেন। ফলনও খুব ভাল হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ কুমার মন্ডল বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন বসেছিলাম। সেখানে বলা হয়েছিল সরকারি নদীতে ধান চাষ করতে দেওয়া হবেনা। আমি বলেছিলাম সরকারি নির্দেশনা আছে যে কোথাও জমি ফেলে রাখা যাবেনা। আমরা বলেছি যদি খনন হয় আর নাব্যতা থাকে তাহলে এমনিতেই কেউ ধান চাষ করতে পারবেনা। আর এটি তো বছরে একবার চাষ করার যোগ্য। অনাবাদি পতিত জমিতে চাষ হলে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে উৎসাহ দেবো। 

বিডি প্রতিদিন/এএ



এই পাতার আরো খবর