ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রংপুরে চরে শুকনো মৌসুমে সবুজ ফসলের হাসি
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
রংপুরে চরে শুকনো মৌসুমে সবুজ ফসলের হাসি

রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় শুকনো মৌসুমে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমি নদীর বুক চিড়ে জেগে উঠেছে। এসব জমির মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি চাষযোগ্য। জেগে ওঠা চরে জমি চাষ করে প্রায় ৬৫/৭০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হয়েছে। এসব ফসল কৃষকদের বাড়তি আয়ের পাশাপাশি এই অঞ্চলের অর্থনীতির গতি সচল রেখেছে। প্রতি বছর এ অঞ্চলে বন্যা ও নদী ভাঙনে শত শত মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েন। আবার শুকনো মৌসুমে জেগে ওঠা চর সবুজ ফসলে ভরে যায়, যা কৃষকদের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস এনে দেয়।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, ঘাঘট, চারালকাটাসহ অন্যান্য নদ-নদীগুলোতে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমির চর রয়েছে। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৫০ হাজার হেক্টরের কিছু বেশি। জেগে ওঠা এসব চরের জমিতে আলু, ভুট্টা, গম, বাদাম, তিল, তিসি, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, করলা, সরিষা, সূর্যমুখী, গাজরসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ হচ্ছে। ফলে শুকনো মৌসুমে চরের যেদিকেই তাকানো যাবে, সে দিকেই দেখা যাবে সবুজের সমারোহ। চর সবুজের বাগানে ভরে ওঠে।

কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এসব চরে আলু প্রতি হেক্টরে ২৪/২৫ মেট্রিক টন, ভুট্টা ১২/১৩ মেট্রিক টন, গম তিন থেকে সাড়ে ৩ টন, শাক-সবজি প্রতি হেক্টরে ১৫ থেকে ২০ টন উৎপাদন হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে এসব ফসল ফলায় কৃষকরা বন্যার সময় প্লাবিত হওয়ার দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলে যাচ্ছেন। নদী পানি শূন্য হয়ে পড়ায় সেগুলো এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়ে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করছে। অক্টোবর থেকে মে মাস পর্যন্ত এসব ফসল উৎপন্ন হয়। সবচেয়ে বেশি হয় আমন ধান এবং ভুট্টা।

চরাঞ্চলের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে একাধিক সংগঠন কাজ করছে। মেকিং মার্কেটস ফর চরস (এমফোরসি) রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় চরে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে।

গঙ্গচড়া উপজেলার লক্ষীটারি ইউনিয়নের আবুল কালাম, মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বন্যার সময় তিস্তা দুই কূল ছাপিয়ে প্লাবিত করলেও শুকনো মৌসুমে ফসলের আবাদ করে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য আসে তাদের। চরে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে বাড়তি টাকায় অনেকে অনেক প্রয়োজন মিটাচ্ছেন।

লক্ষীটারি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ হিল হাদি বলেন, চরের অধিকাংশ মানুষ শুকনো বিভিন্ন প্রজাতির ফসল উৎপাদন করে দারিদ্রতা দূর করছেন।

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চারালকাটা নদীর চরের কৃষক মাহাবুব মিয়া, রবিউল ইসলাম বলেন, চরে পিয়াজ, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল ফলিয়ে তাদের সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, রংপুর অঞ্চলের চরে ৫০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৬৫/৭০ কোটি টাকার ওপরে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর