ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

টানা বৃষ্টিতে আমন চাষিদের স্বস্তি
দিনাজপুর প্রতিনিধি
টানা বৃষ্টিতে আমন চাষিদের স্বস্তি

অনাবৃষ্টির কারণে ধীর গতিতে এবং সেচ দিয়ে আমন চাষিরা আমন ধানের চারা রোপণ করছিলেন। তবে শেষ শ্রাবণে টানা বৃষ্টি হওয়ায় আমন চাষিদের মাঝে ফেরে স্বস্তি। বৃষ্টির ছোয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী কৃষি বিভাগসহ কৃষকরা। বৃষ্টির কারণে এবার কিছুটা আমন ধানের চারা রোপণে বিলম্ব হয়।

ফসলের মাঠ বৃষ্টিতে ভিজতেই পুরোদমে আমন চাষে নেমে পড়েছেন দিনাজপুরের কৃষকরা। এ বছর প্রথমদিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পর্যাপ্ত ছিল না। তাই বীজতলা তৈরি হলেও পানির অভাবে জমি তৈরি করতে পারছিলেন না তারা। তবে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঘাটতি অনেকটাই মিটেছে। নিচু জমি এখন পানিভর্তি। উঁচু জমিতে চলছে সম্পূরক সেচ। জেলার সব এলাকাতেই চারা রোপণে ব্যস্ত হয়েছে কৃষক।

কাহারোলের রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক সুরেশ চন্দ্র রায় জানান, এবার ৩ একর জমিতে ৩৪ জাতের ধান আবাদের জন্য দোগচী করেছিলেন। কিন্তু পানির কারণে ধান রোপণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি ধরেছে এবং সোমবার থেকে চারা রোপণ করছেন। গত কয়েকদিনের পানিতে কাহারোলের আমন চাষিদের আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে।

ফুলবাড়ীর এলুয়ারী ইউপির পানাহার গ্রামের কৃষক আনোয়ার হাজী বলেন, আগে বীজ ফেলেছিলাম। বৃষ্টির অভাবে পরিস্থিতি এমন যে, ভেবেছিলাম হয়তো এই বীজ মাটিতেই মরে যাবে। অনেকে চারা তুলে দোগচি করে রেখেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে বৃষ্টি হওয়ায় বীজগুলোকে বাঁচাতে পেরেছি। চারা রোপণ করছি।

সদর উপজেলার কমলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, আমন বীজ বপনের পর বীজতলায় চারা বড় হয়ে যায়। এতে চারা তুলে দোগচি করে রেখেছিলাম। বৃষ্টি হওয়ায় সেই দোগচি তুলে নিচু জমিতে লাগাচ্ছি।

ঘোড়াঘাট উপজেলার কাদিমনগরের কৃষক সাব্বির হোসেন বলেন, কৃষকরা ১৫ আষাঢ়ের পর ও ১৫ শ্রাবণের মধ্যে সাধারণত আমন ধান রোপণ করেন। এবার শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। এতে পানির অভাবে চারা লাগাতে পারেনি কৃষকরা। চতুর্থ সপ্তাহে যে বৃষ্টি হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। তাই জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বিঘা প্রতি গভীর নলকূপ মালিককে দিতে হয় ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকা। যাদের শ্যালো মেশিন আছে তাদের খরচ ১০০০ টাকা। এটি কৃষকের বাড়তি খরচ।

কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, বৃষ্টি কিছুটা দেরিতে হলো। তবে চাষিরা সময়মতো তাদের আমন ধানের চারা জমিতে লাগিয়েছেন। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম বেশি তাই কৃষকেরা আমন ধান লাগানোর জন্য কোমর বেঁধে নেমেছে মাঠে। আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্জিত হয়ে অতিরিক্ত কিছু জমিতে আমন ধান চাষ হবে আশা করি।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এবার আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে। বৃষ্টির অভাবে এই মৌসুমে পিছিয়ে গেছে আমন চাষ। জেলার ১৩টি উপজেলায় এরই মধ্যে ৪৫ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টির অভাবে আমন রোপণ কিছুটা বিলম্ব হয়।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর