ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ২৫ বছর ধরে আবাদ হচ্ছে না আমনের
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার একটি স্থানের নাম বোতলার দোলা। ওই দোলায় গত আড়াই দশক থেকে আমন মৌসুমে অনাবাদী পড়ে থাকছে এক হাজার একরের বেশি আবাদযোগ্য জমি। দুঃখ জাগানিয়া বোতলার দোলায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ওই জমিগুলো আবাদযোগ্য করা যাচ্ছে না আমন মৌসুমে। 

অথচ ওই জমিতে আবাদ হলে স্থানীয় ভাবে খাদ্যের যোগান পাওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে স্বচ্ছলতা ফিরে আসত। এই অবস্থা বছরের পর বছর ধরে চলে আসলে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষই বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। 

ওই এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গজঘণ্টা ইউনিয়নের রাজবল্লভ বোতলার দোলায় তিস্তার ডানতীর রক্ষা বাঁধে পানি নিষ্কাশনের জন্য ছোট একটি স্লুইচ গেট নির্মাণ করে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলে স্লুইচ গেট দিয়ে পানি ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু ভাটিতে ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে তিস্তার পানি শুকিয়ে গেলে ওই স্থানের পানি নিষ্কাশন হয় না। ফলে ওই স্থানে  প্রতিবছর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কচুরিপানায় ভরে থাকে। ফলে কৃষকরা আমন মৌসুমে ধানের আবাদ করতে পারে না। এভাবেই পড়ে আছে আবাদযোগ্য জমি। 

কৃষক মোত্তালেব ও আবু হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, রাজবল্লভ, জয়দেব, একনাথ, মানাষপাড়া, হাজীপাড়াসহ কয়েকটি এলাকার প্রায় এক হাজার কৃষকের এক হাজার একরের অধিক জমি রয়েছে। উক্ত জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে তারা সংসার চালান। কিন্তু  বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশনের অভাবে জমে থাকা পানিতে আমন ধান চাষ করতে পারেন না। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানীয়রা ছোট স্লুইচ গেটের স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবি করে আসছেন। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে।  

গজঘণ্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, সেই দোলার পানি নিষ্কাশনের জন্য ক্যানেল খনন করা হয়েছিল। কিন্তু ভাটিতে ক্যানেলের সম্মুখে ভরাট হওয়ার কারণে দোলার পানি বের হচ্ছে না। ভাটিতে ক্যানেল খনন করা হলে কৃষকরা আমন ধান চাষ করতে পারবে। এই অবস্থা প্রায় ২৫ বছর থেকে চলে আসলে কোনো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে না। তিনি বলেন, জাইকার অর্থয়নে ক্যানেলের সম্মুখে ভরাট হওয়া স্থান খননের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ফরিদুল  ইসলাম বলেন, প্রায় এক হাজার কৃষকের ওই স্থানে ৪৫ থেকে ৫০ হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। 

রংপুর পানি উন্নয়ন রোর্ডের  নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, এলাকার লোকজন পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি রেগুলেটর কাম ব্রিজ দাবি করে আসছিল। এটি নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা তৈরী করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর