ঢাকা, সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

তরুণদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে দুই ভাইয়ের মিশ্র ফলের বাগান
মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

আড্ডা। কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার একটি গ্রাম। এই গ্রামের দুই তরুণ সাইফুল ইসলাম ফরহাদ ও পারভেজ হোসেন। সম্পর্কে তারা ভাই। প্রথমজন একটি সংস্থায় চাকরি করেন, দ্বিতীয়জন কলেজে পড়েন। চাকরির টাকায় পরিবারের সব রকমের চাহিদা মেটানো কঠিন। তাই বিকল্প আয়ের পরিকল্পনা করেন ফরহাদ। ইউটিউব দেখে ফল চাষের উদ্যোগ নেন। প্রথম দিকে প্রতিবেশীরা হাসাহাসি করেন। তাদের পরিবার থেকেও বাধা আসে। তবে তারা থেমে থাকেননি। এতে তাদের হাতে সফলতাও ধরা দেয়। তাদের দেখে পাশের গ্রামের তরুণরাও এখন স্বপ্ন দেখছে ফল চাষে স্বাবলম্বী হতে।  

সূত্রমতে, ছুটিতে বাড়ির পাশের কিছু জমি লিজ নিয়ে ফল চাষ শুরু করেন ফরহাদ। সাথে ছোট ভাই পারভেজকে যুক্ত করেন। প্রথমে তারা দেড় বিঘা জমিতে বিচিবিহীন চায়না-৩ লেবুর চারা লাগান। লেবুর পর আরো জমি নিয়ে শুরু করেন কুল ও ড্রাগন চাষ। পরবর্তীতে সংযুক্ত করেন ফিলিপাইনের কালো আখ, আঙুর, মাল্টা ও পেয়ারাসহ বিভিন্ন রকমের ফল। কুলের মৌসুমে ভালো আয় হয়েছে। এখন বাগান থেকে লেবু ও পেয়ারা সংগ্রহ করছেন। এতে তাদের প্রতিদিন ১৫০০-২০০০টাকা বিক্রি হয়। লেবুর দাম বাড়লে আয় আরো বাড়ে। আরো বেশি ফল সংগ্রহ শুরু হলে এই আয় দৈনিক ১০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তারা বাগানের নাম দিয়েছেন এসআই এগ্রো ফার্ম।  

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আড্ডা গ্রামে রয়েছে বড় বাজার। বাজার পেরিয়ে আড্ডা পশ্চিমপাড়া। এখানে রয়েছে ৩শতাধিক বছরের প্রাচীন আনোয়ার খাঁ জামে মসজিদ। মসজিদের পশ্চিম দিকে ফসলের মাঠ। খালপাড় ধরে যেতে হয় ফরহাদ ও পারভেজের বাগানে। বর্তমানে তাদের বাগানের পরিমাণ প্রায় তিন বিঘা। গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লেবু ও পেয়ারা। ড্রাগন বাগানে ফুল আসার অপেক্ষায়। রং ছড়াচ্ছে ফিলিপাইনের আখ। মাথা তুলছে আঙুর গাছ।

ফার্মের পরিচালক সাইফুল ইসলাম ফরহাদ বলেন, বাগানে ছোট ভাই বেশি সময় দিচ্ছে। তার সাথে আরো দুইজন সহযোগিতা করেন। প্রথমে পরিবার ও প্রতিবেশীরা হাসাহাসি করতো। এখন সফলতা দেখে সবাই খুশি। আমরা বিষমুক্তভাবে ফসল উৎপাদনের চেষ্টা করছি। আমাদের ইচ্ছে রয়েছে জমির পরিমাণ আরো বাড়ানোর। এতে আয় বাড়ানোর সাথে এখানে আরো বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। 

স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ফরহাদ ও পারভেজ উদ্যোমী তরুণ। তাদের বাগান পরিদর্শন করেছি। আমরা বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়ে ওদের সহযোগিতা করছি। তাদের কাজ দেখে অন্য তরুণরাও উৎসাহী হচ্ছে।

বরুড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহিদ হাসান বলেন, শিক্ষিত তরুণরা দিন দিন কৃষিতে আগ্রহী হচ্ছে। এটা ভালো লক্ষণ। তাদের হাত ধরে আধুনিক কৃষি আরো জনপ্রিয় হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন



এই পাতার আরো খবর