ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চায়না কমলা চাষে লাখোপতি যুবক
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

দিনাজপুর অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কমলা চাষে উপযুক্ত হওয়ায় অল্প খরচে বেশী আয়ের আশায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে। পাহাড়ি অঞ্চলের কমলা এখন দিনাজপুরের বিভিন্ন সমতল ভূমিতে চাষ হচ্ছে। ভালো দাম এবং ফলন ভালো পাওয়ায় এ জাতীয় ফলের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কমলা এখন দিনাজপুর সদর, বিরল, বিরামপুর, বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার সমতল ভূমিতে চাষ শুরু হয়েছে। এতে কর্মসংস্থানও হয়েছে অনেকের।

অপরদিকে বেকার যুবকদের এই কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করছে কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুরের বিরলে চাকরির পিছনে না ছুটে এক বন্ধুর পরামর্শে নিজের পতিত জমিতে চায়না কমলার বাগান করে বাজিমাত করেছেন যুবক শাকিল হোসেন সাদাত। তার এই সাফল্যের কমলা বাগান দেখতে অনেকে ছুটে আসছেন এবং চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কমলায় প্রচুর রস, সুস্বাদু এবং মিষ্টি থাকায় অনেকে কমলা কিনছেনও।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ভান্ডারা ইউপি’র রামপুর মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত. খাদেমুল ইসলামের ছেলে শাকিল হোসেন সাদাত নিজের পতিত প্রায় এক একর জমিতে ছোট জাতের চায়না জাতের কমলা চাষ শুরু করেন। তিন বছর আগে রোপন করা তার এই কমলা বাগানে ২০০টি গাছ রয়েছে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। গতবছর তার বাগানে অল্প পরিমাণে ফলন এসেছে এবং সেই কমলা বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে এসেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এবার পর্যাপ্ত ফলন আসায় ব্যাপক লাভবান হবেন।

ওই বাগানের কৃষি শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, এই বাগান পরিচর্যা ও দেখাভাল করার জন্য ৫ জন শ্রমিক আছি। এই বাগানটি গড়ে উঠার কারণে এখানে কর্মসংস্থান হয়েছে। 

কমলা চাষি শাকিল হোসেন সাদাত জানান, আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করে চাকরির পিছনে না ঘুরে এক বন্ধুর পরামর্শে নিজের পতিত প্রায় ১ একর জমিতে ছোট জাতের চায়না কমলা চাষ করি। বাগানের বয়স প্রায় ২৭ মাস। গতবছর বাগানে অল্প পরিমাণে ফলন আসলেও তা বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে আসে। এবার যে পরিমাণে ফলন এসেছে খরচ বাদ দিয়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবো। ইতিমধ্যে সিলেটের এক ব্যবসায়ী ৫ হাজার টাকা প্রতিমন দর হিসাবে ১শ’মন কমলা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও  চাহিদার কারণে এখন কমলার চারা করেও বিক্রি করছি।

শাকিল হোসেন সাদাত আরও জানান, এটি উচ্চ ফলনশীল সুস্বাদু ফল। সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষে ও মার্চ পর্যন্ত ফুল আসা শুরু হয়। কমলা পরিপক্ক হয়ে রঙ ধারণ করে সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসের দিকে। নভেম্বর থেকে এটি বিক্রি উপযোগী হয়। ফুল আসা থেকে শুরু করে ফল পাকতে সময় লাগে অন্তত ৬ মাস। প্রথম মৌসুমে ফলন একটু কম হয়। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ১০০০-১৫০০ কমলা পাওয়া যায়। 

এ ব্যাপারে বিরল উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, দিনাজপুর অঞ্চলের মাটি কমলা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। পাশাপাশি ফলন ভালো পাওয়ায় এ জাতীয় ফলের আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেকার যুবকদের এই কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে ছোট পরিসরে বাগান করে দেই, প্রশিক্ষণসহ ভালো ফলনের জন্য সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। বিরল উপজেলায় কমলা-মাল্টা জাতীয় ফলের বাগান রয়েছে প্রায় ৪৫ হেক্টরে। এ অঞ্চলে ১৯/২০জন এই জাতীয় ফল চাষ করছেন। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল



এই পাতার আরো খবর