ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

লাঠিটিলায় হচ্ছে সাফারি পার্ক
দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলায় হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। এটি হবে দেশের তৃতীয় সাফারি পার্ক। প্রকল্পটি সম্প্রতি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮০ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটির জন্য ৩৬৪ কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে, শেষ হবে ডিসেম্বরে। প্রকল্প এলাকার আয়তন ৫ হাজার ৬৩১ একর। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭০২ একর বায়োডাইভার্সিটি পার্ক ও ২৭০ একর কোর সাফারি পার্ক। পার্কে রাখা হবে দেশি-বিদেশি প্রাণী। বন বিভাগ মনে করছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মৌলভীবাজারে পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। কর্মসংস্থান হবে এলাকার মানুষের। তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, উদ্ভিদ ও প্রাণিবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে সাফারি পার্ক স্থাপন করা হলে পরিবেশের জন্য সুদূরপ্রসারী ক্ষতি হবে। এ বন থেকে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণিবৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাবে। জানা যায়, দেশের অন্যতম ক্রান্তীয় চিরসবুজ ও জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ বনভূমি লাঠিটিলা। জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত এ বনভূমির আয়তন ৫ হাজার ৬৩১ একর। এখানে থাকা বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে রয়েছে উল্লুক, মায়াহরিণ, উল্টোলেজি বানর, আসামি বানর, মুখপোড়া হনুমান, হাতি। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দুর্লভ পাখির আবাস। এ বনের ২৭০ একর জুড়ে গড়ে তোলা হবে সাফারি পার্ক। দর্শনার্থীরা গাড়িতে ঘুরে ঘুরে খুব কাছ থেকে প্রাণী দেখতে পারবেন। এ ছাড়া প্রাণিকুলের বসবাস ও প্রজননের জন্য থাকবে উপযুক্ত স্থান। থাকবে হাতি পুনর্বাসন কেন্দ্র। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজারের জেলা সমন্বয়ক আ স ম ছালেহ সুহেল বলেন, ‘লাঠিটিলা বনে যে জীববৈচিত্র্য বা ভূমির বৈশিষ্ট্য, তা দেশের অন্য কোনো বনে নেই। বনে প্রাণীরা অবাধ বিচরণ করে। এখানে সাফারি পার্ক হলে জীববৈচিত্র্যের এ পরিবেশ থাকবে না। এ বনবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে সরকার সরে আসবে বলে আমরা আশা করি।’ বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষক বিভাগ সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ সাফারি পার্ক হলে মৌলভীবাজারে পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হবে। দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক এ পার্কে আসবেন। বনের মাত্র ২৭০ একর জায়গায় এ পার্ক করা হবে। এতে বনের কোনো ক্ষতি হবে না।’ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপি বলেন, ‘এ এলাকায় বসবাসকারীদের আমরা সুবিধাজনক জায়গায় রাখব; বনের ক্ষতি না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল নেব। পার্ক হলে এলাকার বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’



এই পাতার আরো খবর