ঢাকা, বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

সহজে দেখা মেলে না ছোটকান প্যাঁচার
নজরুল মৃধা, রংপুর
ছোটকান প্যাঁচা

ছোটকান প্যাঁচা আমাদের দেশের একমাত্র পরিযায়ী প্যাঁচা। এই প্যাঁচার আচরণ অন্য সব পাখির থেকে আলাদা। এটিকে সচরাচর দেখা যায় না। শুকনো মৌসুমে পরিযায়ী হয়ে আমাদের দেশে কদাচিৎ এসে থাকে। তেমনি একটি ছোটকান প্যাঁচা পাখির দেখা পাওয়া গেল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর একটি চরে।

এই প্যাঁচা সম্পর্কে জানা গেছে, অন্য আরও ১৬ প্রজাতির প্যাঁচার থেকে এই প্যাঁচাটি আলাদা এবং পরিযায়ী। এই প্যাঁচাটিকে উপকারি প্যাঁচা হিসেবেও ধরা হয়ে থাকে। অন্য সব প্যাঁচা নিশাচর হলেও এই প্যাঁচাটি দিনের বেলায় খাবার সংগ্রহ করে থাকে। তাই একে দিবাচরও বলা যেতে পারে। ছোটকান প্যাঁচা লম্বায় ৩৩ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের ডানা ১০৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। পুরুষের চেয়ে মেয়ে প্যাঁচার ওজন কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। পুরুষের ওজন ২০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম এবং  মেয়ে প্যাঁচার ওজন ২৮০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই পাখিগুলোর দেহের নিচে হলদে সাদার সঙ্গে কালচে রঙ আছে। পুরুষের চেয়ে স্ত্রী পাখি আকারে একটু বড়। গায়ের রঙের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। এদের মাথাটা বড় ও কানটা ছোট।  গোলাকার মুখ ধূসর সাদা ও চোখগুলো হলুদ। পিঠে ও গায়ে কালো সাদা বুটিক আছে। কারো কারো গায়ে হলুদের মিশ্রন রয়েছে। চোখের রঙ কালো, ঠোঁট কালো ও খাট। পাগুলো পালক দিয়ে মোড়ানো। এদের নখগুলো দেখতে কালো হয়।

এই পাখিটি তৃণভূমি, ফসলের জমি, বালিয়ারি কিংবা পাহাড়ি অঞ্চলে খাবার শিকার করে। এরা জোড়ায় কিংবা একাকি খাবারের সন্ধানে বের হয়। উড়ন্ত পোকা মাকড় সংগ্রহ করে এরা খায়। এ ছাড়াও ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ, বাদুড়, ফড়িং ইত্যাদি জাতীয় প্রাণী এদের প্রিয় খাবার। এদের প্রজননের সময়কাল হলো মার্চ থেকে জুন মাস। এরা সাধারণত মরা গাছের কোটরে কিংবা মাটিতে ঘাস পাতা বিছিয়ে ৪ থেকে ১২টি পর্যন্ত ডিম পারে। ডিম থেকে বাচ্চা দিতে সময় লাগে ২৪ থেকে ২৯ দিন। শাবককে বড় হতে সময় লাগে প্রায় এক মাস। এদের গড় আয়ু ১৩ থেকে ১৪ বছর।

ছোটকান প্যাঁচার ছবিটি তুলেছেন রংপুরের সৌখিন আলোকচিত্রী, প্রকৃতি বিষয়ক লেখক ও কবি রানা মাসুদ।

তিনি এই পাখি প্রসঙ্গে বলেন, ছবিটি শনিবার তিস্তা নদীর চর থেকে তোলা হয়েছে। দুর্লভ ছোটকান প্যাঁচা বা Short Eared Owl. বাংলাদেশের একমাত্র পরিযায়ী প্যাঁচা। প্যাঁচা নিশাচর হলেও ছোটকান প্যাঁচা দিনের বেলা খাবার সংগ্রহ করে। বাসস্থান ও খাদ্য সংকটের কারণে এই প্রজাতির প্যাঁচা পাখি এখন বিপদাপন্ন  এবং বিপদগ্রস্ত। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এই পাখি সংরক্ষিত প্রাণী।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর