ঢাকা, বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

চড়ুই পাখির অভয়ারণ্য দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
ফাইল ছবি

চড়ুই চঞ্চল প্রকৃতির পাখি। এরা মানুষের আশপাশে বসবাস করতে ভালোবাসে। ভোর হতেই বেশির ভাগ পাখি চলে যায় আহারের সন্ধানে দূর-দূরান্তের কোনো এলাকায়। আবার বিকাল হলেই সেই সব চড়ুই পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে ফিরে আসে নীড়ে। তখনই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। আর এ  মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায় ব্যস্ততম দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন চত্বর এলাকায়। যেন চড়ুই পাখির অভয়ারণ্য।

প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা কিচিরমিচির শব্দ পাখিপ্রেমিকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এখানে কেউ পাখি শিকার বা পাখিকে ঢিল ছুড়তে পারে না। তাই গাছের পাতায় পাতায় ভরে থাকে অগনিত চড়ুই পাখি। এখানে ট্রেনে সারা দিন মানুষের ওঠানামার কোলাহল থাকলেও নিরাপদ ভেবে থাকছে কিংবা উড়ছে এসব চড়ুই পাখি। সকালে কিংবা সন্ধ্যায় জনসমাগম কমার সময় কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে এসব পাখির ঝাঁক। 

দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ মুখে বরই গাছে বিকাল হলেই ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি এসে বসে। আশপাশে কয়েক গাছের পাতায় পাতায়, বিভিন্ন সাইন বোর্ডের ওপরে, কারেন্টের তারে ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখির সারি। চড়ুই পাকলকাকলিতে মুখথাকে পড়ন্ত বিকা। ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখি পাতায় পাতায় বাসা বেঁধেছে। পাখির ঝাঁকের কলরব আর কিচিরমিচিরে রেলস্টেশনে আসা যাত্রীদের মুগ্ধ করে। সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসে ততই পাখির আনাগোনা বাড়তে থাকে। বিকাল হলেই গাছের ডাল ও পাতার ফাঁকে ফাঁকে পাতার চেয়ে পাখিই বেশি দেখা যায়। 

স্টেশন এলাকার এ চিত্র এখন প্রতিদিনের। এখানে ছবি বা সেলফিও তোলেন অনেক পাখিপ্রেমী। চড়ুই পাখি বছরে একাধিকবার প্রজনন করে। প্রতিবারে ৪-৬টি করে ডিম দেয়। এদের ছানা বেঁচে থাকে প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ। ক্ষতিকর পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষক যথেচ্ছ কীটনাশক ব্যবহার করছে। চড়ুই প্রধানত শস্যদানা, ঘাসের বিচির পাশাপাশি পোকামাকড় খেয়ে থাকে। বিশেষ করে পোকার শুককীট, মুককীট বা লেদাপোকা, যারা শস্য উৎপাদনের অন্তরায়। চড়ুই পাখি এসব পোকার ক্ষতিকর আক্রমণ থেকে ফসল, সবজির খেত, বনাঞ্চল বাঁচিয়ে পরিবেশ ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কিন্তু ফসলের খেতে কীটনাশক ছিটানোর কারণে এসব খাবার খেয়ে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে চড়ুই পাখি। কিন্তু ব্যতিক্রম দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন চত্বর এলাকা। 

স্টেশন এলাকার আমিনুল ইসলাম জানান, দিনে যখন পাখি থাকে না তখন মনে হয় কী যেন নেই। বিকালে যখন পাখিরা ফিরে কিচিরমিচির শব্দ শুরু করে তাদের মন মুগ্ধ করে। পরিবেশ বিষয়ক সংগঠক মোসাদ্দেক হেসেন জানান, চড়ুইয়ের যে কয়েকপ্রজাদেখা যায়, তার মধ্যে সবার পচত এ প্রজাদলবদ্ধ। প্রজনের আগে তারা একত্রে ঝাঁক বেঁধে উড়ে আসে বসত গড়ে। আবার চলে যায় অন্যত্র।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর