ঢাকা, রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

বাড়ছে সরিষা আবাদ
ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

অল্প সময়ে কম খরচে ভালো ফলন হওয়ায় সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এছাড়াও গত বছর সরিষা চাষে ভাল মুনাফা পেয়ে অনেকে ঝুঁকছেন সরিষা চাষে। যার কারণে প্রতি বছর বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বাড়ছে সরিষা চাষ। গত বছরের তুলনায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় দুই গুণ। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪শ’ হেক্টর এ বছর বেড়েছে আরও ৩ হাজার ৬শ হেক্টর। গত বছর সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় সরিষায় আশার আলো দেখছেন কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক আবদুচ ছোবহান বলেন, চট্টগ্রামে এ বছর ব্যাপকহারে আবাদ বেড়েছে, কৃষকরাও আগ্রহ নিয়ে চাষ করছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে তাদের প্রণোদনা, সহায়তা ও পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে কৃষকদের উপজেলা থেকে এডিবি ফান্ডের অর্থায়নেও সহযোগিতা করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, চন্দনাইশ উপজেলার শঙ্খ নদীর তীরে এলাকা ছেয়ে গেছে হলুদ সরিষা ফুলে। বিস্তীর্ণ এলাকায় হলুদ উৎসবে মুগ্ধ স্থানীয়রা। আর এ হলুদ সরিষা ফুলে ভাগ্য খুলছে কৃষকদের, দেখাচ্ছে নতুন আশা। উপজেলার দোহাজারী, লালুটিয়া, বরমা, চর-চরমা, চন্দনাইশ পৌরসভা, কাঞ্চননগর, সাতবাড়িয়া, বৈলতলী এলাকায় ব্যাপকহারে  এ বছর সরিষার চাষ করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে চট্টগ্রামে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ৯শ’ ৮০ হেক্টর। এরমধ্যে মীরসরাইয়ে ৫৭৮ হেক্টর, সীতাকুণ্ডে ১৭০ হেক্টর, ফটিকছড়িতে ৮৭২ হেক্টর, হাটহাজারীতে ৫৪৮ হেক্টর, রাউজানে ৭৪৭ হেক্টর, রাঙ্গুনিয়ায় ৭৪৭ হেক্টর, বোয়ালখালীতে ২৪৯ হেক্টর, পটিয়ায় ২৫০ হেক্টর, কর্ণফুলীতে ৪৯ হেক্টর, আনোয়ারায় ৩৭৪ হেক্টর, চন্দনাইশে ৩২৪ হেক্টর, লোহাগাড়ায় ২৪৯ হেক্টর, সাতকানিয়ায় ৫৭৩ হেক্টর, বাঁশখালীতে ১২৫ হেক্টর, ও সন্দ্বীপে ১২৫ হেক্টর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন, চাষের সময় আর খরচ দুটোই কম হওয়ায় কৃষকের কাছে বেশ জনপ্রিয় সরিষা চাষ। গত কয়েক বছরে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ফলে শস্যটির ফলনও আগের চেয়ে বেড়েছে। এ কারণে দিন দিন বাড়ছে সরিষার চাষ। বাজারে দাম ভালো থাকায় সরিষায় আশার আলো দেখছেন কৃষকরা। এছাড়াও গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার ভাল ফলন এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে আবাদকৃত জমিতে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে। সরিষা উঠে যাওয়ার পর জমিগুলো উর্বর থাকে। এতে বোরো আবাদেও লাভবান হবেন কৃষকেরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে সরকার। এজন্য ফসলটির উৎপাদন বাড়াতে নেয়া হয়েছে বড় প্রকল্প। ফসলের শ্রেণিবিন্যাসে পরিবর্তন এনে গতিশীল করা হচ্ছে সরিষার চাষ। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সরিষার উৎপাদন বাড়িয়ে দেশে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে বারি ও বিনার উদ্ভাবিত সরিষার জাতগুলোর ফলন বেশি। এ কারণে এতে চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকেই আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করছেন। এরপর আবার বোরো ধান রোপণ করতে পারছেন। এতে একই জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল



এই পাতার আরো খবর