ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

রঙিন ফুলকপির চাষ করে দ্বিগুন লাভের স্বপ্ন কৃষকের
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
ছবি- বাংলাদেশ প্রতিদিন।

অল্প জমিতে ভেষজগুণ সম্পন্ন বেগুনি রঙের ভেলেনটিনা ও কমলা রংয়ের কেরটিনা জাতের রঙিন ফুলকপির চাষ করে দ্বিগুন লাভবান হচ্ছেন দিনাজপুরের কৃষক মতিয়ার রহমান। কৃষক মতিয়ারের এমন সফলতায় অনেকেই এই রঙিন ফুলকপি চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এতে আগামীতে এর চাষ এলাকায় বাড়বে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, প্রতিদিন কৃষকসহ অনেকে ক্ষেতে বিদেশি জাতের রঙিন ফুলকপি দেখতে ভিড় করছেন। কেউ নিচ্ছেন চাষের পরামর্শ। আবার কেউ তুলছেন রঙিন ফুলকপির ছবি কিংবা সেলফি। 

টিভিতে দেখে আগ্রহের পর নিয়মিত পরিচর্যা এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবার চাষে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের নশরতপুর ইউপির নশরতপুর গ্রামের কাজিপাড়ার কৃষক মতিয়ার রহমানের দেড় বিঘা জমিতে রঙিন ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সবজি চাষ করেন। এবছর তিনি বেগুন, পেঁপে, ফুলকপি, স্কোয়াশ, ওলকপি, মরিচ, ব্রকলি, কলা চাষের পাশাপাশি নতুন জাতের রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে আশানুরুপ। দ্বিগুন লাভের আশা করছেন তিনি। 

কৃষক মো. মতিয়ার রহমান জানান, টিভিতে রঙিন কপির ছবি দেখে চাষের প্রতি আগ্রহ হয়। এরপর আমি সৈয়দপুর, দিনাজপুর, বীরগঞ্জ, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে রঙিন কপির বীজ কিংবা চারার জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরেও সন্ধান কোথাও পাইনি। তখন সিনজেন্টা কোম্পানির জনৈক প্রতিনিধি প্যাকেট ছাড়াই বেগুনি রংয়ের ভেলেনটিনা ও কমলা রঙের কেরটিনা জাতের রঙিন কপির বীজ সরবরাহ করে। এসব বীজের চারাসহ ব্রকলি, ফুলকপির চারা করে দেড় বিঘা জমিতে রোপণ করি। এতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। ক্ষেতে কোনো প্রকার কীটনাশক ও সার প্রয়োগ না করে কেবল জৈব সার ব্যবহার করেছি। চারা রোপণের ৭০-৭৫দিনের মধ্যেই ফুল আসে। বর্তমানে তিনি এসব কপি বিক্রি শুরু করেছি। বাজারে ক্রেতাদের রঙিন কপির প্রতি আগ্রহ এবং দামও ভালো পাচ্ছেন। 

তিনি আরও বলেন, বাজারে সাধারণ ফুলকপি ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। বাজারে নেয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এ রঙিন কপি। এ জমি থেকে তিনি ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। অল্প জমিতে চার রংয়ের ফুলকপি চাষ করে দ্বিগুণ লাভের আশা করছি। 

মতিয়ারের এমন সফলতায় অনেকেই রঙিন কপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।  নশরতপুর ইউপির দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খাদেমুল ইসলাম জানান, রঙিন ফুলকপি ভেষজগুণ সম্পন্ন সবজি। স্বাদেও ভালো। সাধারণ ফুলকপির তুলনায় রঙিন ফুলকপিতে ২৫ শতাংশের বেশি ক্যারোটিন রয়েছে। যা ত্বক ও চোখকে ভালো রাখে। এটি কোলাজেন ধ্বংস করে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চিরিরবন্দরে প্রায় ১৫বিঘা জমিতে বিভিন্ন উচ্চ মূল্যের সবজি যেমন, স্কোয়াশ, ক্যাপসিকাম, রঙিন ফুলকপি, রঙিন বাঁধাকপি, ব্রকলি আবাদ প্রদর্শনী কৃষকদের প্রদান করা হয়েছে। রঙিন ফুলকপিতে সাদা ফুলকপির তুলনায় অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে। রঙিন ফুলকপির বাজার মূল্য অনেক বেশি। আবাদ সম্প্রসারিত হলে কৃষকরা নিঃসন্দেহে লাভবান হবেন।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর