ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

মাশরুম চাষে সফল কলেজছাত্র রাকেশ
দিনাজপুর প্রতিনিধি

নিজ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করতে লেখাপড়া করার পাশাপাশি মাশরুম চাষ করছেন কলেজছাত্র রাকেশ সরকার প্লাবন। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। রাকেশ সরকার প্লাবনের নিজ বাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা মাশরুম এখন বাজারজাতের অপেক্ষায়। তবে ফুলবাড়ী উপজেলায় মাশরুমের চাহিদা তেমন না থাকায় উৎপাদিত মাশরুমের বাজারজাত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এই উদ্যোক্তা। অনেকে এই মাশরুম দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।

সরকারিভাবে সহজ শর্তে কৃষিঋণ কিংবা আর্থিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে আগামীতে বড় পরিসরে মাশরুম চাষের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান এই শিক্ষার্থী। রাকেশ সরকার প্লাবন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরের চাঁদপাড়া গ্রামের নিখিল চন্দ্র সরকার এবং রিক্তা রানী সরকারের ছেলে। সে দিনাজপুর গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অবস সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ইলেক্ট্রিক্যাল ডিপ্লোমার তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী।

রাকেশ সরকার প্লাবন বলেন, পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার শ্রমিক বাবা। তার উপার্জন দিয়ে তার লেখাপড়াসহ পরিবারের ভরণ-পোষণ চলছে। বাবার কষ্ট দেখে খারাপ লাগে। একারণে বাবাকে সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতেই শুরু করেন মাশরুম চাষ। এজন্য তিনি দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টার ও ফুলবাড়ী কৃষি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তাদের পরামর্শে সংগ্রহ করেন মাশরুমের স্পন।

চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেন এবং ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাশরুম সংগ্রহ শুরু করেছেন। বর্তমানে মাশরুম উৎপাদিত হলেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাজারজাত নিয়ে। ফুলবাড়ীতে মাশরুমের চাহিদা তেমন না থাকায় বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তোরাঁয় যোগাযোগ করেও তেমন আগ্রহ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কয়েকজন হোটেল ও রেস্তোরাঁর মালিক মাশরুমের নমুনা চাওয়ায় তাদের দেওয়া হয়েছে এবং উত্তরের অপেক্ষায় আছেন বলে জানান তিনি।

রাকেশ সরকার প্লাবন আরও বলেন, প্রতিকেজি মাশরুম উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। আর প্রতিকেজি পাইকারি মাশরুম বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে।

রাকেশ সরকার প্লাবনের বাবা নিখিল চন্দ্র সরকার ও মা রিক্তা রানী সরকার বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়িতেই মাশরুম চাষের কথা বলায় প্রথমে অমত ছিল তারা। কিন্তু ছেলের জেদে সম্মতি দিতে বাধ্য হয়। এক পর্যায়ে তারাও ছেলের একাজে সহযোগিতা করেন। লেখাপড়ার জন্য প্লাবন দিনাজপুরে থাকলে আমরাই মাশরুমের স্পনগুলোতে দুইবেলা স্প্রে করি। ছুটি পেলেই প্লাবন বাড়ি এলে এ চাষে ব্যস্ত থাকে। তার কষ্টের ফল একদিন নিশ্চয় সে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, মানবদেহের জন্য খুব উপকারী ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন এ মাশরুম চাষ লাভজনক। রাকেশ সরকার প্লাবনকে মাশরুম চাষে সার্বিকভাবে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রাকেশ সরকার প্লাবনকে মাশরুম চাষে আরও দক্ষ করে তোলার জন্য আগামীতে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই



এই পাতার আরো খবর