ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

হারিয়ে গেছে উত্তরের ২০০ নদনদী
আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব
নজরুল মৃধা, রংপুর
ফাইল ছবি

তিস্তায় গজলডোবা এবং পদ্মায় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে উত্তরাঞ্চলে ২০০টির মতো নদনদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। এর ফলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সাড়ে চার মাস থেকে এ অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা নেই। অনেকটা খরা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জীববৈচিত্র্য পড়েছে হুমকির মুখে। তিস্তা, পদ্মাসহ অন্য নদনদীগুলো এখন হেঁটে পার হওয়া যায়।

উত্তরাঞ্চলে প্রকৃতির রূপ থেকে প্রবাহ থমকে যাওয়া নদনদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : ধরলা, জলঢাকা, দুধকুমার, তিস্তা, সতী, ঘাঘট, নীলকুমার, বাঙালি, বড়াই, মানাস, কুমলাই, লাতারা, ধুম, বুড়িঘোড়া, সোনাভরা, হলহলিয়া, লোহিত্য, ঘরঘরিয়া, ধরণী, নলেয়া, জিঞ্জিরাম, ফুলকুমার, কাটাখালী, শালমারা, রায়ঢাক, খারুভাজ, যমুনেশ্বরী, চিকলী, মরা করতোয়া, ইছামতী, আলাইকুমার, মরাতি, পাগলা, চন্দনা, বারাহি, হাব, নবগঙ্গা, সর্বমঙ্গলা, চিনারকুক, ভাঙা, খলিসা, গদাই, প্রাচীন ইছামতী, কমলা, নারদ ইত্যাদি। একসময় শাখা হিসেবে ওই সব নদনদী দাপটের সঙ্গে এ অঞ্চলের প্রকৃতি শাসন করত। পানির প্রবাহ থমকে যাওয়ায় এসবের অনেক স্থানে নগরায়ণ হয়েছে। আবার অনেক স্থান পরিণত হয়েছে আবাদি জমিতে।

নদীবিষয়ক গবেষক-লেখকসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা অববাহিকা অর্থাৎ রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় ৫০টির বেশি নদনদীর প্রবাহ থেমে গেছে গজলডোবা বাঁধের কারণে। দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার ৪০টির বেশি নদনদীর প্রবাহ নেই। অর্ধশতাব্দী আগে এসব নদনদীতে ছিল পানির প্রবাহ ও প্রাণের স্পন্দন। বর্তমানে অনেক স্থানে এসব নদনদীর কোনো অস্তিত্বই দেখা যায় না। এ ছাড়া পদ্মা অববাহিকায়ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট প্রায় ১০০ নদনদী কালের অতলে হারিয়ে    গেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের অবস্থা আরও করুণ। কুড়িগ্রামের চিলমারী এলাকায় শুকনো মৌসুমে এ নদ হেঁটে পার হওয়া যায়।

নদীবিষয়ক গবেষক ও রিভারাইন পিপল  কমিটির পরিচালক, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদ জানান, ফারাক্কা ও গজলডোবা বাঁধের কারণে উত্তরাঞ্চলে ২০০টির মতো নদনদী অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। পদ্মায় পানি না থাকায় মেঘনার পানিপ্রবাহ করে গেছে। নদীবিষয়ক লেখক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, হারিয়ে যাওয়া নদীর অস্তিত্ব রক্ষায় সরকারকে দ্রুততম সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে এ অঞ্চলের মরুকরণ ঠেকানো যাবে না।

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

 



এই পাতার আরো খবর