ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

খরতাপে বাগানে স্নিগ্ধতা ছড়াচ্ছে কচুরিপানা
মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কচুরিপানা। বাংলাদেশে খাল, বিল, নদী বা জলাশয়ে দেখা যায়। সবুজ পাতার মাঝে হালকা বেগুনি কচুরিপানার ফুল। সেই কচুরিপানা এখন বাগানেও চাষ হচ্ছে। ড্রাম, বালতি বা সিমেন্টের পাত্রে। 

কুমিল্লা সদর উপজেলার গুণানন্দী গ্রামের একটি বাগানে কচুরিপানার চাষ করতে দেখা গেছে। কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির পরিচালক ডা. আবু নাঈম অন্যান্য উদ্ভিদের সাথে এই কচুরিপানার চাষ করেন। তার বাগানে রয়েছে পাঁচ প্রজাতির কচুরিপানা। কোনটি সাদা, কোনটি নীল ও বেগুনি। খরতাপেও  স্নিগ্ধতা ছড়াচ্ছে ফুল গুলো। 

বিভিন্ন সূত্র জানায়, বাংলাদেশের জলাশয়ে এখন যে কচুরিপানা ভাসতে দেখা যায়, দেড়শ’ বছর আগে এর কোনো অস্তিত্ব এ অঞ্চলে ছিল না। ১৮শ’ শতকের শেষভাগে ব্রাজিল থেকে কচুরিপানা নিয়ে আসা হয়েছিল। মূলত আমাজন জঙ্গলের জলাশয়ে থাকা উদ্ভিদ এটি। জর্জ মরগান নামে এক স্কটিশ ব্যবসায়ী ব্রাজিল থেকে বাংলায় কচুরিপানা নিয়ে আসেন। অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের একজন পাট ব্যবসায়ী অস্ট্রেলিয়া থেকে এই কচুরিপানা বাংলায় এনেছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এটি সার হিসেবেই বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বায়োগ্যাস উৎপাদনেও ব্যবহৃত হচ্ছে। গবাদিপশুর খাবারে কচুরিপানা যোগ করা হয়। এছাড়া শুকনো কচুরিপানা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ৯০ দশকে কচুরিপানার মূল দিয়ে দাড়ি গোফ বানায়নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

ডা. আবু নাঈম বলেন, কচুরিপানা প্রকৃতগতভাবে খুবই সহনশীল এবং দ্রুত বর্ধনশীল উদ্ভিদ। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এই একটিমাত্র উদ্ভিদ পঞ্চাশ দিনে তিন হাজারের বেশি সংখ্যায় বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে যেতে পারে। কচুরিপনার ফুলের এক প্রকারের স্নিগ্ধতা রয়েছে। যা দর্শনার্থীকে মুহূর্তেই বিমোহিত করে। তাই বিভিন্ন প্রকারের কচুরিপানা সংগ্রহ করে বাগানে লাগিয়েছি।

পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত বলেন, সমাজে বর্তমানে পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য দরদের অভাব রয়েছে। পরিবেশের জন্য দরদী মানুষ সৃষ্টিতে কাজ করছেন ডা. আবু নাইম। নিজের ব্যস্ত জীবনের মাঝেও এই সবুজ আন্দোলন ব্যতিক্রম।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, কুমিল্লায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে ডা. আবু নাঈমের কাজ দেখেছি। তিনি ব্যতিক্রম সব উদ্ভিদ সংগ্রহ করেন। তার এই শুভ উদ্যোগ বেঁচে থাকুক।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত



এই পাতার আরো খবর