তীব্র তাপপ্রবাহের পর কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লিচু খ্যাত দিনাজপুরে অসংখ্য লিচু ঝরে পড়েছে। মাথায় হাত পড়েছে ক্ষতিগ্রস্থ বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। এসবের প্রভাব পড়েছে লিচুর বেচা-কেনাতেও। লিচুর চড়া দাম হলেও কিনছেন কেউ ব্যবসার জন্য, কেউ আত্মীয়-স্বজন পরিবার-পরিজনের জন্য।
ঝড়ে শুধু লিচুর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এই তথ্য এখনও পুরোপুরি নিরূপণ করতে পারেনি কৃষি বিভাগ। তবে দিনাজপুরে প্রায় ২০-৩০ ভাগ নষ্ট হয়েছে লিচু। এবার লিচুর মৌসুম অল্পদিনেই শেষ হয়ে যাবে এমনটাই বলছেন লিচু বাগানী ও ব্যবসায়ীরা।
এখন দিনাজপুরে সব প্রকারের লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। চায়না থ্রি, বেদানা, মাদ্রাজি, বোম্বাই, হাড়িয়া সুস্বাদু লিচু বাজারে আসছে। তবে দাম চড়া। পাইকার-ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েই কিনছেন লিচু। পাইকাররা লিচু কিনে পাঠাচ্ছেন রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায়। সকাল থেকেই দিনাজপুর শহরের নিউমার্কেট ফলের বাজারে লিচু বেচাকেনা জমজমাট। বাজারে মাদ্রাজি বিক্রি হচ্ছে প্রতিশ ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা, বেদানা প্রতিশ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, বোম্বাই ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা এবং সবচেয়ে বেশি দামে প্রতিশ ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে চায়না থ্রি লিচু।
চড়া দাম হলেও অনেকে ব্যবসার জন্য কিনছেন, অনেকে আবার আত্মীয়-স্বজন পরিবার-পরিজনের জন্য বেশি দাম দিয়ে লিচু কিনে পাঠাচ্ছেন। মৌসুমে ফল শখের বসে অনেকে লিচু পরিবারের জন্য কিনছেন। এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে লিচুর ফলনও কমেছে। এরপর গত বুধবার দিবাগত রাতে দিনাজপুর শহরজুড়ে কালবৈশাখীর তাণ্ডবে পড়ে যায় লিচু বাগানগুলো। ঝড়ে লিচু বাগানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ এবং গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় লিচুগুলো বাজারে নিয়ে আসেন বাগানিরা।
লিচু কেনা-বেচায় জড়িত মোসাদ্দেক হোসেনসহ কয়েকজন জানান, দাবদাহের কারণে এবার তো এমনিতে লিচুর ফলন কম। তারমধ্যে বুধবারের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক গাছেরই মাঝখান ভেঙ্গে গেছে। ঝড়ে লিচু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে, দাম চড়া। ঝরে পড়া লিচুর দাম কম হলেও অন্যগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ২৫-৩০ ভাগ লিচু নষ্ট হয়ে গেছে ঝড়ে। এই লিচুর মৌসুম এবার আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরে ৫৭৮০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার মেট্রিক টন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল