ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪

আজকের পত্রিকা

জুলেখা-নাজমাদের স্বপ্ন পূরণ হলো
অনলাইন ডেস্ক
জুলেখা খাতুন

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার খোষকান্দি গ্রামের জুলেখা খাতুন (৩৭)। হাসি হাসি মুখে অতিথিদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। কথা বলার জন্য ডাকতেই থামলেন। 

কেন ঋণ নিচ্ছেন জানতে চাইলে জুলেখা বলেন, ‘এইবার ঋণ নিতে আইছি শখের কিছু হাঁস-মুরগি পালনের জন্য। এইটা আমার তিনবারের মতো ঋণ নেওয়া। জীবনের এক পর্যায়ে চোখেমুখে অন্ধকার দেখছিলাম। কী করব? অভাবের তাড়নায় কিছুই ভালো লাগে না। জানতে পারলাম বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন সুদ মুক্ত ঋণ দেয়। খোঁজ নিয়ে যোগাযোগ করতেই সুদমুক্ত ঋণ পেয়ে গেলাম। এই টাকা দিয়া সেলাই মেশিন কিনে মানুষের কাপড় সেলাই করতে শুরু করলাম। প্রথমে কাপড় পাওয়া যেত না। গ্রামে ঘুরে ঘুরে সেলাইয়ের জন্য কাপড় সংগ্রহ করে সেলাই করতাম। সঙ্গে কাপড় বিক্রিও করতে শুরু করি। ভাতের অভাব দূর হয়। দ্বিতীয় ধাপে আবার ঋণ নিয়ে সেই টাকা দিয়ে একটি বাছুর কিনলাম। সেলাই মেশিন চালানোর পাশাপাশি বাছুরটি পালতে শুরু করলাম। বছরখানেক পর বিক্রি করে ভালো টাকাই হাতে এলো।মেশিন চালিয়ে কিছু টাকা জমিয়েছিলাম। সেই টাকা দিয়ে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠাই। আল্লাহর রহমতে এখন আর কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা নেই। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ আমারে জিরো থেকে হিরো বানাইছে। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল সংসারটা ভালো করে চালানোর। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।  বসুন্ধরা যদি আমারে সহযোগিতা না করত কখনো আমি এই অবস্থায় আসতে পারতাম না। বসুন্ধরার মালিকদের জন্য অনেক দোয়া করি।’

মানিকপুর গ্রামের নাজমা (৩৩) বলেন, ‘গরিব বলে আমাদের কেউ ধারও দিতে চায় না। বসুন্ধরার সুদমুক্ত ঋণ পেয়ে বাড়ির আশপাশের মানুষের জমিগুলো বর্গা নিয়ে কৃষিকাজ শুরু করলাম। প্রথমবার খাবারের অভাবটা মোটামুটি দূর হয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বার ঋণ নিয়ে ইরি ধানসহ বড় আকারে কৃষিকাজ শুরু করি। জমিতে ফসল খুব ভালো হয়। সংসারের খাবারের ফসল রেখে অনেক টাকা বিক্রিও করতে পারি। এখন প্রতিবছর জমি থেকে আমাদের ভালো আয় হয়। এখন আর অভাব নেই। বসতবাড়ির জন্য একখণ্ড জমি ক্রয় করার স্বপ্ন দেখছি। আশা করি, খুব তাড়াতাড়িই কিনতে পারব। আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ক্ষুদ্রঋণ।’

মানিকপুর গ্রামের শুকতারা (২৮) বলেন, ‘বসুন্ধরার সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে মানুষের জমি বর্গা নিয়ে কৃষিকাজ শুরু করেছিলাম। ফসল ভালো হলো। ছেলেমেয়েরা এখন তিন বেলা খেতে পারে। দ্বিতীয়বার ঋণ নিয়ে কৃষিকাজের সঙ্গে হাঁস-মুরগি পালন শুরু করি। বাড়ির আশপাশে পুকুর আছে, হাঁস পালাটা খুব সহজ হলো। কয়েক মাস পর হাঁস-মুরগিগুলো বিক্রি করে ভালো আয় হলো। তৃতীয়বার ঋণ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন কিনব। সেলাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে গজ কাপড় বিক্রি করব। হাঁস-মুরগি, কৃষি এবং সেলাই থেকে ভালো টাকাই আসবে। অভাব থাকবে না। অভাবী হওয়ার কারণে আশপাশের লোকেরা কাছে আসত না। এখন সবাই আমাদের আপনজন। এইটা সম্ভব হয়েছে বসুন্ধরার সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণের কারণে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, বসুন্ধরার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভালো চলুক এবং মালিকরা ভালো থাকুক।’

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ



এই পাতার আরো খবর